হনুমান জয়ন্তীতে পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন নিরাপত্তা, রাস্তায় নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

হনুমান জয়ন্তীতে পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন নিরাপত্তা, রাস্তায় নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

হনুমান জয়ন্তীতে পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন নিরাপত্তা, রাস্তায় নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

রামনবমী পালনের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের তিন জায়গায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে সে রাজ্যে।পশ্চিমবঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা বেশ বিরল ঘটনা।

এর আগে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পরে ভারতে যে দাঙ্গা হয়েছিল, সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছিল।আর শেষবার কলকাতা শহরের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেনা নেমেছিল ২০০৭ সালে, তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে কলকাতার রাস্তায় মৌলবাদীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে। রাজ্য সরকার একরকম বাধ্য করেছিল তসলিমা নাসরিনকে কলকাতা ছেড়ে চলে যেতে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় একগুচ্ছ নির্দেশিকা পাঠিয়েছে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মহারাষ্ট্র সহ যেসব রাজ্যে রামনবমীকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে, সেই সব রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপরে বিশেষ জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে হনুমান জয়ন্তীর দিন বাড়তি সতর্কতা ব্যবস্থা হিসাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে হবে।

কড়া নিরাপত্তা

রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে কোনও ধরণের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে বলেছে আদালত।হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে অস্ত্র নেওয়া নিষেধ করেছে হাইকোর্ট, আর প্রতিটা মিছিলের জন্যই স্থানীয় থানা থেকে অনুমতি নিতে হবে, এমন নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতা, ব্যারাকপুর আর হুগলিতে তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।এর মধ্যে কলকাতাতেই রয়েছে এক কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। পুলিশ বলছে পোস্তা, চারু মার্কেট, হেস্টিংস, একবালপুর ও গার্ডেনরিচ থানা এলাকায় টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।আবার যে হাওড়া শহরের শিবপুরে রামনবমীর দিন প্রথম সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বেঁধেছিল, সেখানে স্থানীয় পুলিশ রুট মার্চ করছে বলে জানা যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং বিরোধী দল বিজেপি – উভয়েই আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছে হাইকোর্টে প্রমাণ হয়ে গেল যে রাজ্য সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যে কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে।কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পুলিশের টহলদারীর মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। তিনি যেমন একটি হনুমান মন্দিরে পুজো দিয়েছেন, তেমনই আবার মানুষের কাছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খোঁজও নিয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি