অপহরণ বলে থানায় জিডি পরে জানা গেল, ঋণের চাপে আত্মগোপন

অপহরণ বলে থানায় জিডি পরে জানা গেল, ঋণের চাপে আত্মগোপন

ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল (ছবি সংগৃহিত)

গত ৬ই জুন রাত সাড়ে ১১টায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেলকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা কালার দোয়ালের ব্রিজ এলাকা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগে তার পিতা বৃদ্ধ মোঃ হাশেম মিজি গত ৭ই জুন রাজবাড়ী থানায় জিডি করেন। জিডি নং-৩৭২ ।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার নাটক সাজিয়ে গত ৪দিন ধরে আত্মগোপনে থাকার পর ফল ব্যবসায়ী মোঃ ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল (৪৮)কে গত ৯ই জুন সকালে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। পরে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ছিদ্দিক মিজি সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নয়নদিয়া গ্রামের মোঃ হাশেম মিজির ছেলে।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় প্রিন্ট-ইলেক্টনিক ও অনলাইন মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। তাকে উদ্ধারের জন্য মাঠে নামে রাজবাড়ী থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের তথ্য প্রযুক্তিতে এক্সপার্ট একটি টিম।

এ বিষয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ ইফতেখারুজ্জামান জানান, মূলত ঘটনাটি ছিল ছিদ্দিক মিজির সাজানো নাটক। ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি ঋণগ্রস্ত ছিল। অনেকেই তার কাছে মোটা অংকের টাকা পয়সা পাবে। ঋনের টাকা ফেরত না দিতে পেরে সে হতাশায় ভুগছিলো। তাই সে নিজেকে আত্মগোপন করার জন্য এই নাটক সাজায় এবং সে তার বন্ধুর সাথে পরিকল্পনা করে কাজটি করে। সে তার বন্ধু সাঈদকে ফোন দিয়ে বলে যে তাকে ডিবি পুলিশ ধরছে। পরবর্তীতে বন্ধু সাঈদ পরিবারকে জানালে ছিদ্দিক মিজির পিতা থানায় নিখোঁজ জিডি করে।
জিডির সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৯ই জুন সকালে তাকে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাতে রাজবাড়ী সদর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় জিডি এন্ট্রির পর দেশের প্রত্যেকটি থানায় ম্যাসেজ দেওয়া হয়। এছাড়াও জিডির সূত্র ধরে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৯ই জুন সকাল ১০টায় তাকে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মুচলেকা নিয়ে রাতেই তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ছিদ্দিক মিজি রাজবাড়ী থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, সে আশা, ব্র্যাক ও শক্তি ফাউন্ডেশন এনজিও থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যবসার জন্য ঋণ নেয়। কিন্তু ঋণের কিস্তির টাকা সময়মত দিতে না পারায় এনজিওদের চাপে সে আত্মগোপন করে এ নাটক সাজিয়ে ছিল। এ জন্য সে অনুতপ্ত প্রকাশ করে ।