দক্ষিণঞ্চালের সর্ববৃহৎ সাতমাইল পশুর হাট জমে উঠেছে

দক্ষিণঞ্চালের সর্ববৃহৎ সাতমাইল পশুর হাট জমে উঠেছে

সংগৃহিত ছবি।

জমে উঠেছে শার্শা উপজেলার সাতমাইল কোরবানির পশুর হাট। তবে বর্তমান পেক্ষাপটে সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচের তুলনায় কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে বাড়তি দামে চাহিদামতো গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শার্শার সাতমাইল পশুহাটটি দেশীয় গরুতে জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন জাতের দেশি গরু, ছাগল, মহিষে বাজার পরিপূর্ণ হলেও মুখে হাসি নেই খামারি, সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে গো-খাদ্যের দামও দ্বিগুণ হওয়ায় পশুর দাম ডবল হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা। ফলে কেনার সক্ষমতা হারিয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেক ক্রেতা। তবে সাধারণ গরু বিক্রেতারা জানান, দূর-দূরান্ত থেকে গরু হাটে নিয়ে এসে কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না। যার ফলে এবার লাভ তো দূরের কথা, লোকসানও গুনতে হতে পারে।

ভারতীয় গরু না আসায় এবার সাতমাইল পশু হাটে দেশীয় গরুর ব্যাপক আমদানি হয়েছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এ বাজার থেকে গরু যায় দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে।

হাট ইজারাদার সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবীর বকুল বলেন, ভারতীয় গরু না আসায় দেশি গরুর ব্যাপক উপস্থিতি ও চাহিদা রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর যে দাম, তাতে খামারি ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। দামের প্রভাবে গরু ক্রয়-বিক্রয় কম হওয়ায় আমাদেরও লসের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

এছাড়াও সাতমাইল গরুহাট ইজারাদার আবু তালেব হতাশা প্রকাশ করে বলেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য মাইকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। ঈদের আগে আর দুটি হাট আছে। বিক্রি না বাড়লে বড় ধরনের লোকসানের শিকার হতে হবে বলে তিনি জানান।

শার্শা উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিনয় কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, এ বছর উপজেলায় কোরবানি জন্য এ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ি ৯ হাজার ৮৭৩ টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। হিসাব চলমান থাকায় সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানা যায়। প্রস্তুতকৃত কোরবানির পশুর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভি মিলে ৩ হাজার ৩৯৬ টি, মহিষ ৩ টা, ছাগল ৬ হাজার ৩৫০ টি এবং ভেড়া রয়েছে ১২৪টি। এর মধ্যে ১২ জন বাণিজ্যিক খামারির খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে এক হাজার গরু। বাকি বিভিন্ন ধরনের পশু গুলো পারিবারিক ভাবে ২-১০ টি পর্যন্ত প্রান্তিক লালন-পালনকারিরা প্রস্তুত করেছেন। চলতি বছর উপজেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯ হাজার ১২০টি। চাহিদার থেকে প্রস্তুতকৃত তুলনায় ৭৫৩টি কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত হিসাবে থাকছে। যা বাইরের জেলাতে সরবরাহ করা যাবে।

সাতমাইল ও নাভারণ পশু হাটে কোরবানির পশু বেচা কেনার সময়ে মেডিকেল টিম কাজ করছে। কোন পশু রোগাক্রান্ত হলে তা শনাক্তে কাজ করছে মেডিকেল টিম। একই সাথে হাটে থাকবে ক্যাশলেস ব্যবস্থা । ক্রেতারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু কিনতে পারবেন বলে তিনি জানান।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, পশুহাটে যেন কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং ব্যবসায়ীরা যেন নির্বিঘ্নে তাদের পশু ক্রয়- বিক্রয় করতে পারেন, এজন্য উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।