হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে জেরে এক দিনে ১৭০৮৩৯ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছিল আদানির

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে জেরে এক দিনে ১৭০৮৩৯ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছিল আদানির

গৌতম আদানি

বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর জানুয়ারিতে কার্যত ধস নেমেছিল আদানি গ্রুপের শেয়ারগুলোতে। রেকর্ড ক্ষতির মুখে পড়ে ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানির। এই বছরের জানুয়ারিতে এই রিপোর্ট প্রকাশের পর গৌতম আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ধাক্কা খায়। কোম্পানিগুলো পরের কয়েক সপ্তাহে বাজারে রেকর্ড পতন প্রত্যক্ষ করে। আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান জানান, এক দিনের সবচেয়ে বড় ক্ষতির রেকর্ড হয়েছে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি। প্রায় ২০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে ওই দিন।

২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেল কোম্পানির মাধ্যমে শেয়ারের মূল্যে ম্যানিপুলেশন, কর্পোরেট অব্যবস্থাপনার মতো বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছিল। যদিও এমন ধরনের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গ্রুপ। কিন্তু ওই সময় এই গোষ্ঠীর সমস্ত শেয়ারের দরে উল্কা গতিতে পতন শুরু হয়। এর জেরে বাজারের মূল সূচকগুলোও কমতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে আদানি গোষ্ঠী বাজারের মূলধনের কয়েক বিলিয়ন ডলার হারায়।

মার্চের শেষের দিকে বিনিয়োগকারী রাজীব জৈনের জিকিউজি পার্টনার আদানি গ্রুপের চারটি সংস্থা আদানি পোর্ট, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশন এবং আদানি এন্টারপ্রাইসের প্রায় ১৫,০০০ কোটি রুপির স্টেক কেনেন। মে মাসে এই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ফার্মটি গৌতম আদানির গোষ্ঠীতে নিজেদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করেছে। জুন মাসে তিনটি আদানি কোম্পানিতে আরো ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এই সংস্থা। আদানি গোষ্ঠীর স্টকগুলোতে যে হারে পতন হয়েছিল, তেমন গতিতে পুনরুদ্ধার দেখা যায়নি। আদানি টোটাল গ্যসের শেয়ারগুলো জুনের ত্রৈমাসিকে ২৫ শতাংশ হারিয়েছে। অন্যদিকে, আদানি ট্রান্সমিশনের স্টকও গত ত্রৈমাসিকে প্রায় ২৩ শতাংশ পতনের সম্মুখীন হয়েছে। আপাতত কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বিশ্বের তাবড় তাবড় বিলিয়নেয়ারের তুলনায় অনেকটায় পিছিয়ে আছেন আদানি।

উল্লেখ্য, নতুন করে কাজ শুরু হচ্ছে আদানির বিভিন্ন প্রজেক্টগুলোতেই। হলদিয়া বন্দরে ৪০০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করতে চলেছে আদানি। বুধবার হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ভবনে মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১ জুলাই জায়গা হস্তান্তরের কাজ শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর, অগস্ট থেকে শুরু হবে কাজও। দু’বছরের মধ্যেই হলদিয়া বন্দরের দুই নম্বর বার্থে আমদানি ও রফতানি শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন আদানি গ্রুপের বিজনেস হেড প্রশান্ত কুমার পাত্র। বিপুল ক্ষতির পরে কিভাবে ঘুরে দাঁড়ান আদানি, সেটাই এখন দেখার।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস