আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন

আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন

আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্যানুসন্ধানের জন্য কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সফরে এসেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খান।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে তিনি আইসিসির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে শরণার্থী শিবিরে আসেন। সকাল ১০টায় তার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ১ ওয়েস্ট ক্যাম্পের সিআইসি অফিসে আসেন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

প্রতিনিধিদলের সাথে আলাপ করা রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাস্টার জুবাইর জানিয়েছেন, সাক্ষাৎকালে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কিভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধন ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া গণহত্যা চালানো, সর্বশেষ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে কিভাবে পালিয়ে এসেছিল তার বর্ণনা দেন। এ সময় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন নারী সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং তারাও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের রোহিঙ্গা নারীদের অত্যাচার নির্যাতন ধর্ষণের বিস্তারিত বিবরণ দেন।

পরে আইসিসির প্রতিনিধি দল উখিয়া বালুখালী শরণার্থী শিবিরের ৯ ও ১২ নম্বর ক্যাম্পও পরিদর্শন করেন এবং সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একাধিক নারী ও পুরুষ প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলেন। বিকেলে আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে ফিরে আসেন।

নেদারল্যান্ডের হেগভিত্তিক আইসিসির আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতন গণহত্যা নিয়ে তদন্ত করছে আইসিসি প্রসিকিউশন বিভাগ। রোহিঙ্গার ওপর গণহত্যার অভিযোগের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার চারদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন করিম খান। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যারা রোহিঙ্গা জেনোসাইডে জড়িত, তাদেরকে বিচার ও জবাবদিহির আওতায় আনতে চান আইসিসি।বুধবার বিকেলে কক্সবাজারে পৌঁছে বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সাথে বৈঠক করেছেন নেদারল্যান্ডসের আইসিসির এই আইনজীবী।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ খালেদ হোসেন জানান, বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম এ এ খান কক্সবাজার পৌঁছান। তার সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে আসেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কমিশনের সাথে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।তিনি জানান, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ও তাদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেয়ায় ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং ক্যাম্পের নারী ও শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেন আইসিসি কৌঁসুলি ।আইসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উখিয়ার ১ ৯ ও ১২ নম্বর ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নারী ও পুরুষ প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলছেন। যাদের সাথে কথা বলেছেন তারা নেদারল্যান্ডসের এই আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বলে জানানো হয়েছে।