অধ্যাপক তাহের হত্যা: রাবি শিক্ষক মহিউদ্দিন স্থায়ী বরখাস্ত

অধ্যাপক তাহের হত্যা: রাবি শিক্ষক মহিউদ্দিন স্থায়ী বরখাস্ত

ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ মে ইস্যু করা এক চিঠিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আজ রোববার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বহিষ্কারের চিঠিটি ইস্যু করেন।

রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলায় মহামান্য বিজ্ঞ আদালত আপনাকে (মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন) মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট উক্ত মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৪২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানের তারিখ অর্থাৎ ২২ মে ২০০৮ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের পদ ও চাকরি থেকে আপনাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হলো।’

বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, ‘মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গ্রেপ্তারের পর থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত ছিলেন। এরপর এ মামলায় তিনি বিভিন্ন সময়ে আপিল করেছেন। সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় বিধি অনুযায়ী তিনি সুবিধা পেয়েছেন। তবে ২৩ মে বরখাস্ত করা হলেও তিনি ২০০৮ সাল থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত। এ সময়ে নেওয়া সুযোগ-সুবিধা বিধি অনুযায়ী তাকে ফেরত দিতে হবে।’

এদিকে, অধ্যাপক তাহের হত্যায় জড়িত মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তার বাড়ির কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি গত বুধবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছেছে। জেল কোড অনুযায়ী চিঠি পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে চলতি মাসেই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।

২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে অধ্যাপক তাহেরের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেদিন তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বেকসুর খালাস দেওয়া হয় দুজনকে। বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আসামি আবদুস সালাম ও নাজমুল আলমকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।