আজ বড় শোডাউনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

আজ বড় শোডাউনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

ফাইল ছবি।

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশ ও রাজপথে সতর্ক অবস্থান নিয়ে এর আগে থেকেই সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগ। ঢাকাসহ সারাদেশে এ শান্তি সমাবেশ করে আসছিল দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। তবে বিএনপির এক দফা ঘোষণার প্রেক্ষাপটে আজকের শান্তি সমাবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। এ কারণে সমাবেশে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।

প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত দু’দিনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে বর্ধিত ও প্রতিনিধি সভা করেছে। উভয় সভায় মহানগরীর দুই অংশের মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের স্ব স্ব এলাকার দল ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর সমাবেশে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর বিভিন্ন আসনের সরকারদলীয় এমপি ও জনপ্রতিনিধিদের অধিকসংখ্যক নেতাকর্মীকে সমাবেশে উপস্থিত করতে বলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের জরুরি প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবন মিলনায়তনে। মহাগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকা থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক জনসমাগমের প্রতিশ্রুতি দেন। এর আগে সোমবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বিশেষ বর্ধিত সভা করে সমাবেশে লক্ষাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতির মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপির এক দফা ঘোষণার দিন ঢাকার শান্তি সমাবেশটি প্রথমে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে নেওয়া হয়। আর সমাবেশের লোকসমাগম বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, গুলিস্তান, নবাবপুর, ঠাঁটারীবাজার, মুক্তাঙ্গন, পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব এলাকায় টানানো হবে মাইক।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম সমকালকে বলেছেন, এক দফার আন্দোলন ও সমাবেশের নামে বিএনপি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করতে চাইলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। সরকারের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে আছি। কাউকে মাঠ দখলে নিতে দেব না, মাঠ ছেড়েও দেব না। দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগও দেব না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিএনপি মাঝেমধ্যে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করে। সুতরাং তাদের আবার নতুন করে এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা বিশেষ গুরুত্ববহ নয়। তবে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে থাকব। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী সমকালকে বলেন, শান্তি সমাবেশ অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে জনসমুদে রূপ নেবে। একই সঙ্গে নেতাকর্মীর ব্যাপক উপস্থিতি প্রমাণ করে দেবে, দেশবাসী আগামী নির্বাচনে আবারও ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে জয়যুক্ত করবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত নৈরাজ্য-সন্ত্রাস করতে চাইলে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। যেখানেই সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের অপচেষ্টা চলবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে থাকবেন তারা।