বাড়ছে নদ-নদীর পানি, তীব্র হচ্ছে ভাঙন

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, তীব্র হচ্ছে ভাঙন

সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ফলে সারাদেশে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সঙ্গে তীব্র হচ্ছে নদী ভাঙন। ইতিমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চেলর জেলা নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে।

এসব জেলায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘর বাড়ি, ফসলি জমি।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়ছে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফুলবাড়ি উপজেলায় নাওডাঙা ইউনিয়নে শতাধিক বসতবাড়ি। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী পাড়ের মানুষরা।

অন্যদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধিতে সিরাজগঞ্জের চৌহালী, শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। নদীতে চলে গেছে স্কুল, বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। ভিটেমাটি আর বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ।

যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে টাঙ্গাইলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলা সদর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের বসতভিটা, ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলে টাঙ্গাইলে যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় অর্ধশাতাধিক গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই স্থায়ী গাইড বাঁধ নির্মাণের দাবী এলাকাবাসীর।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে দেশের অধিকাংশ নদ-নদীগুলোর পানি। বিপদসীমার ওপরে রয়েছে চারটি নদীর পানি। আরও কিছু নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ওঠার শঙ্কা রয়েছে।

বর্তমানে দেশের চার জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে আরও কিছু এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদী ফুলছড়ি ও বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

এদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে পদ্মা নদীর পানি, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায়, তিস্তা ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কমতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে এবং কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, তাদের পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশন আছে ১০৯টি। এরমধ্যে পানি বেড়েছে ৬৯টি স্টেশনের, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত আছে ৪টির । আর বিপদসীমার ওপরে আছে ৪টি স্টেশনের পানি।

বর্তমানে কমলাকান্দার সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমা ৮ মিটার ওপর দিয়ে বইছে। একইভাবে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১২ মিটার, দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি ৪৯, ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে পানি এখন বিপদসীমার ২১ মিটার ওপর দিয়ে বইছে