হিরো আলমের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ৪

হিরো আলমের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ৪

প্রতীকী ছবি

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলাকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) জনসংযোগ শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার কে এন রায় নিয়তি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বিকেলে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রের বাইরে হিরো আলমের ওপর হামলার পরপর ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের সদস্যরা।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলাকালে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন হিরো আলম। বিভিন্ন কেন্দ্রে নিজের এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে হিরো আলম বলেন, যেহেতু আমার এজেন্টের গায়ে হাত দিয়েছে, তাহলে আমার গায়েও যে হাত দেবে না, তার কি নিশ্চয়তা আছে?

রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে বিকেল সাড়ে তিনটার একতারা প্রতীকের প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তায় তাকে কেন্দ্র থেকে বাহির নিয়ে যাওয়া হয়। গেট থেকে বের হওয়া মাত্র নৌকার সমর্থকরা তাকে ধাওয়া দেন এবং মারধর শুরু করেন। তাদের মারধরের মাটিতে পড়ে যান হিরো আলম।

এ সময় প্রায় ৫০ জনের বেশি যুবক ৩০ সেকেন্ড ধরে তাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। হিরো আলমের সমর্থকরা তাকে দ্রুত তুলে নিয়ে দৌড় দিলে নৌকার সমর্থকরা তাদের পেছন পেছন যায়। বারবার হামলার এক পর্যায়ে হিরো আলমের সমর্থকরা দ্রুত বনানীর দিকে চলে যান। বনানীর ২৩ নম্বর সড়কে একটি স্থানে গিয়ে একটি রিকশায় ওঠেন। পরে তার সেখানে পৌঁছালে গাড়িতে করে চলে যান।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ বলেছে, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনাটি পুরোপুরি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ঘটে এবং এতে কেন্দ্রের ভেতরে ভোটগ্রহণে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দ্রুততম সময়ে ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এদিকে, হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মনির হোসাইন খান জানিয়েছেন, একতারা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় যারা জড়িত ভিডিও দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।’

উপনির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। তবে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিল।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন ৮ জন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির (জাপা) সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) ও মো. তারিকুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, হিরো আলম গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেখানে মহাজোটের প্রার্থী জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি।