গৃহবধূকে হত্যার পর বাড়ির পাশে মাটিচাপা

গৃহবধূকে হত্যার পর বাড়ির পাশে মাটিচাপা

ছবিঃ সংগৃহীত।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় এক গৃহবধূর মাটিচাপা দেওয়া অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, যৌতুক না পেয়ে ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি তাঁকে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়েছেন। গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) রাত একটার দিকে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের গাজীপুরা গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ওই গৃহবধূর নাম মানসুরা আক্তার (২৮)। তিনি উপজেলার রামচন্দ্রদী গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে৷ এ ঘটনায় তাঁর স্বামী মো. আশরাফ (৩৫) ও শাশুড়ি সেলিনা বেগমকে (৫৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মানসুরার মামা মোহাম্মদ আলী বলেন, বছর তিনেক আগে বিশনন্দী এলাকার তাঁতশ্রমিক আশরাফের সঙ্গে মানসুরার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আশরাফকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পর আশরাফ আরও দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু মানসুরার বাবার পক্ষে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। আশরাফ এ নিয়ে মানসুরাকে মারধর করেন। মানসুরার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে তিনি সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে আশরাফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন মানসুরা।

মোহাম্মদ আলী বলেন, মানসুরা তাঁর সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এর মধ্যে ১০ জুলাই মীমাংসার কথা বলে আশরাফ তাঁর বাড়িতে মানসুরাকে ডেকে নেন। মানসুরা ছেলেকে বাবার বাড়িতে রেখেই সেখানে যান। তার পর থেকে আর মানসুরাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁরা আশরাফের কাছে মানসুরার খোঁজ জানতে চাইলে বলেন, মানসুরা বাড়ি থেকে চলে গেছেন। তখন মানসুরার খোঁজ পেতে তাঁরা থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন।

গোপালদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহাগ সাহা বলেন, সাধারণ ডায়েরির পর ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আশরাফ ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাঁর মায়ের সহায়তায় বাড়ির পাশের একটি ঝোপে মাটিচাপা দিয়েছেন। পরে সোমবার (১৭ জুলাই) রাত একটায় তাঁদের দেখানো স্থান থেকে মানসুরার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিহত নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।