বরিশালে কবরে শুয়ে শাশুড়িকে দাফনে বাধা পুত্রবধূর

বরিশালে কবরে শুয়ে শাশুড়িকে দাফনে বাধা পুত্রবধূর

ফাইল ছবি

সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা অমীমাংসিত রেখে মারা গেছেন শাশুড়ি। তাই শাশুড়িকে দাফন করতে দেবেন না পুত্রবধু। শাশুড়ির দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে নিজেই শুয়ে পড়েছেন। পরে পুলিশ এসে পুত্রবধূকে হেফাজতে নিয়ে তার শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করেছে।

ঘটনাটি সোমবার (১৭ জুলাই) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামে ঘটলেও মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শাহনাজ বেগম (৪৫) নামে এক নারী তার শাশুড়িকে কবর দিতে বাধা দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

তিনি বলেন, ওই গৃহবধূর কর্মকাণ্ডে তার গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে পুত্রবধু শাহনাজকে হেফাজতে নিয়ে তার শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করা হয়। শাহনাজের মুচলেকা নিয়ে তার ভাইয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

পুত্রবধু শাহনাজ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহিমের স্ত্রী। আর প্রয়াত আনোয়ারা বেগম (৮০) ওই গ্রামের মৃত মোবারক আলী খানের স্ত্রী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাহনাজের প্রতিবেশীরা জানান, মৃত মোবারক ও আনোয়ারা দম্পতির পাঁচ কন্যা ও এক ছেলে রয়েছেন। ছেলে আব্দুর রহিম সৌদি প্রবাসী। জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে শাশুড়ি ও ননদদের সঙ্গে শাহনাজের বিরোধ চলছিল। শাহনাজের শাশুড়ি আনোয়ারা মারা যাওয়ার আগে দাফনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। সেখানে দাফনের জন্য তার কবরও খোঁড়া হয়। ওই জমি নিজেদের দাবি করে শাহনাজ তার শ্বশুরের কবরের পাশে শাশুড়িকে দাফন করতে বলেন। কিন্তু তার ননদরা মায়ের ওসিয়ত করা স্থানে দাফন করবেন বলে জানান। এ নিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে শাহনাজ তার শাশুড়ির জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। এ খবর পেয়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।

উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মৃধা মো. আক্তারুজ্জামান মিলন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। 

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, এক নারী খোঁড়া কবরে শুয়ে রয়েছেন। গ্রামবাসীরা তাকে সেখান থেকে ওঠানোর চেষ্টা করছে। কবরের আশেপাশে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। সেখানে জড়ো হওয়া গ্রামবাসীরা বলছেন, আপন শাশুড়ি। এমন কাজ কি কেউ করে। তখন একজন তাকে বলছে, ‘আপনি কাগজে না পাইলে কি করবেন। আপনি কি কবরে শুয়ে জায়গা (জমি) নেবেন।’