বকেয়া বেতনের দাবি নিয়ে শ্রমিকেরা গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে

বকেয়া বেতনের দাবি নিয়ে শ্রমিকেরা গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে

ছবিঃ সংগৃহীত।

বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবি নিয়ে গাজীপুরের স্টাইলক্রাফট নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ওই কারখানার শ্রমিকেরা বৃষ্টিতে ভিজে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা ৩টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বকেয়া বেতন প্রদানের বিষয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।

স্টাইলক্রাফট কারখানার শ্রমিক আসমা বেগম বলেন, ‘ডিসি (জেলা প্রশাসক) স্যার আমাদের শেষ ভরসা। তাই গতকাল শ্রমিকেরা তাঁর কাছে গেলে তিনি আমাদের আজ সকালে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। তাই সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসি। এখানে আসার পর কয়েক জন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে বিকেলে বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে বিকেল চারটার মধ্যে আমাদের বেতনের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আমরা সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিকেল চারটা পর্যন্ত এখানেই থাকব।’

কারখানার সুইং অপারেটর আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িতে গিয়ে কী করব? বাসভাড়া দিতে পারছি না। দোকান থেকে বাকি নিয়েছি, সেই টাকা দিতে পারছি না। খুবই দুরবস্থার মধ্যে আছি। বেতন ছাড়া বাড়িতে গিয়ে আমাদের কোনো শান্তি নেই। তাই এখানেই বসে সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।’

আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, স্টাইলক্রাফট নামের তৈরি পোশাক কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। মালিকপক্ষের কাছে তাঁদের জুন ও জুলাই মাসের বেতন এবং কোরবানি ঈদের বোনাস পাওনা আছে। এই পাওনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ জুলাই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ১ আগস্ট তাঁদের বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু পাওনা আদায় না করে মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ করে নোটিশ টাঙিয়ে দেয়। গতকাল সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকেরা বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে কারখানার সামনের রাস্তায় আন্দোলন শুরু করেন।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল্লাহ আল নূর বলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে তাদের দাবির কথা জানায়। পরে আজ বিকেলে মালিকপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানানো হয়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, সকালে শ্রমিকেরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। সেই শ্রমিকদের একটি অংশ অবস্থান করছে। কারখানা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।