বল পরিবর্তন আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত: আইসিসি

বল পরিবর্তন আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত: আইসিসি

সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের শেষ দিন বল পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। এই ‘বল পরিবর্তনের’ কারণে ম্যাচটি তাদের হারতে হয়েছে বলেও মন্তব্যও করেছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ এন্ড্র ম্যাকডোনাল্ড, ওপেনার উসমান খাজা, সাবেক ক্রিকেটার রিকি পন্টিংসহ আর অনেকে। বল পরিবর্তনের বিষয়টি আইসিসিকে খতিয়ে দেখতে বলেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বল বিতর্কের বিষয়টি নিয়ে স্পস্ট বার্তা দিয়েছেন আইসিসির একজন মুখপাত্র। তিনি জানান, বল পরিবর্তন আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত। এই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেবে না আইসিসি।

ওভালে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টের শেষ দিন ৩৮৪ রানের টার্গেটে ৩ উইকেটে ২৬৪ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ৩৭তম ওভারে ইংল্যান্ড পেসার মার্ক উডের বাউন্সার খাজার হেলমেটে গিয়ে আঘাত করে। হেলমেটে বল লাগায় মাঠের দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন এবং কুমার ধর্মসেনা মনে করেছিলেন, হেলমেটে লেগে বলের আকৃতি পাল্টে গিয়েছে। এজন্য ঐ বলটি বদলে আরেকটি বল নেন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ধস নামে। ৩৩৪ রানেই অলআউট হয় টেস্ট হারে অজিরা। ৪৯ রানের জয়ে সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ হারায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে বল পরিবর্তনের অভিযোগ তুলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ম্যাকডোনাল্ড, ‘এখানে কোন সন্দেহ নেই ম্যাচের পরিস্থিতি বদলে গেছে। আমি বলবো, বল পরিবর্তন বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।’

ম্যাচ শেষে বিরক্ত খাজা বলেন, ‘বল পাল্টানোর সময় আমি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার সঙ্গে কথা বলি। যে বলটা নেয়া হল তাতে লেখাগুলো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। অথচ পুরনো বলে সে সব ছিল না। একেবারেই আলাদা দুটো বল। যে বলটা নেয়া হয়েছিল, সেটা একেবারে নতুন বলের মতো শক্ত ছিল। আমি গোটা অ্যাশেজে ওপেন করেছি। জানি, নতুন বল ব্যাটে এসে লাগলে কেমন আওয়াজ হয়। এটাতেও ঠিক সে রকমই আওয়াজ হচ্ছিল। মার্ক উডকে আমি আগেও খেলেছি। আমি ওকে বলি যে, তুমি তো রিভার্স সুইং করা পুরনো বল বদলে একেবারে নতুন বল পেয়ে গেলে। বলটা দেখে মনে হচ্ছিল খুব বেশি হলে আট ওভার পুরনো।’

অস্ট্রেলিয়া দলের পাশাপাশি প্রাক্তন অজি ক্রিকেটাররাও অভিযোগ তুলেছেন। সাবেক ক্রিকেটার রিকি পন্টিং এবং গ্লেন ম্যাকগ্রা এই ম্যাচের বল পরিবর্তন নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে রিকি পন্টিং নিজের হতাশা প্রকাশ করে স্কাই স্পোর্টসে বলেন, ‘বল পরিবর্তনের সময় যে বলটিকে বেছে নেয়া হয়েছে তার সঠিক অবস্থা সম্পর্কে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। পৃথিবীতে এমন কোনো উপায় নেই যেখানে ওই দুটি বলের দিকে তাকিয়ে বলতে পারা যাবে এগুলো একে অপরের তুলনাযোগ্য। তবে যে বলটি পরিবর্তন করা হচ্ছে তার সঙ্গে নতুন বলের যতটা সম্ভব সাদৃশ্য দেখেই তা পরিবর্তন করা হয়। বলের বাক্সতে অনেক পুরনো বল ছিল সেইগুলি আম্পায়াররা হাতে ধরেও ফেলে দিয়েছেন।’

এই বিতর্ক নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে আইসিসি। আইসিসির গ্লোবাল ক্রিকেট গভর্নিং বডির এক সদস্য বলেন, ‘ম্যাচগুলিতে আম্পায়ারের নেয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে আইসিসি কোনও হস্তক্ষেপ করে না। তবে আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারি প্রতিটি ম্যাচ শুরুর আগে সব বল আগে থেকে নির্বাচন করা হয়েছে। যখন বল বদলের মতো পরিস্থিতি হয়েছে কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় সঠিক বলটি বেছে নিয়েছে।’

এমসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ইনিংসের কোন সময় যদি বল পরিবর্তন করতে হয়, তখন আগের বলের কাছাকাছি মানের একটি বল নির্বাচন করবে আম্পায়াররা।