প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রণোদনা জরুরী।

প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রণোদনা জরুরী।

সালাহ উদ্দীন বিন নূরী

বিশ্বব্যাপী এই মহামারি স্তম্ভিত করে দিয়েছে পরাক্রমশালী ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোকে। স্থবির হয়ে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মৃত্যুর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছে প্রতিটি মানুষ। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। হাতে গোনা কিছু শিল্পকারখানা ছাড়া বেশির ভাগেরই চাকা ঘুরছে না। কর্মহীন বিপুলসংখ্যক মানুষ এখন গৃহবন্দী। এই মহামারির দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। যা ইতোমধ্যে বিশ্বনেতারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। জাতির উদ্দ্যেশ্যে তিনি বিভিন্ন সময় ভাষণ দিয়ে সাহস যুগিয়েছেন দিয়েছেন সঠিক দিকনির্দেশনা। ঘোষনা করেছেন বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।

দেশের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে ব্যবসায়ীদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী   বিভিন্ন মেয়াদে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষনা করেছেন যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুরদর্শিতা ও বড় মনের পরিচয় বহন করে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে এখানে প্রাইভেট বা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকদের বিষয়ে কোন কথা উল্লেখ নেই। গত ১৭ মার্চ থেকে অফিস আদালতের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ, যার কারনে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর সম্মুখীন হচ্ছে এই স্কুল মাদরাসাগুলো। বেকার হয়ে আছেন কয়েক লক্ষ শিক্ষক। যাদের বেতন আর বাড়ি ভাড়া দেয়া হতো ছাত্রদের বেতন থকেই। অধিকাংশ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ভর্তুকি দিয়েই চালানো হচ্ছে। লকডাউনের কারনে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানে আসতে পারছেনা। যার কারনে শিক্ষকদের বেতন বাড়ি ভাড়া গুনতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। অথচ দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য। সরকারি স্কুল মাদরাসার পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত প্রাইভেট স্কুল-মাদরাসাগুলো শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখছে এবং সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে সরকারের। সময়োপযোগী ও মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি দেশের বেকার সমস্যা দুরীকরণে ৪০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এই বেসরকারি শিক্ষাখাত। 

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনো সরকারি কোন অনুদান পায় না বা পাওয়ার আবেদনও করে না। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পুরো বিশ্ব যখন দিশেহারা, দেশের অর্থনীতির টালামটাল অবস্থা। ঠিক এই দুঃসময় নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত স্কুল-মাদরাসাগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে লাখ লাখ বেকার হয়ে পড়ার বিরাট আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারনে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। আর কতদিন বন্ধ থাকবে সেটাও সবার অজানা। বর্তমানে মাহে রমজান চলছে সামনে আসছে ঈদুল ফিতর, পরিবারের ভরণ-পোষনের পাশাপাশি মৌলিক চাহিদা পূরনে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগন আজ দিশেহারা। আশঙ্কা করছি যতই দিন যাবে ততই দেশে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকতর সংকটে নিপতিত হবে। এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে এখনই পাইভেট স্কুল-মাদরাসাগুলোর  জন্যে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রয়োজন।সরকারের উচ্চ মহলে এবং মানমীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমরা আশা করছি তিনি এই বিষয়গুলো বিশেষভাবে বিবেচনা করে শিক্ষাখাতে গুরুদায়িত্ব বহনকারী এসব শিক্ষকদের পাশে থাকবেন এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি প্রনোদনা প্যাকেজর আওতায় আনবেন।

সালাহ উদ্দীন বিন নূরী

হেড অব ডিপার্টমেন্ট, মানার এডুকেশন কমপ্লেক্স, ঢাকা।