প্লাবিত হচ্ছে ফেনীর নতুন নতুন এলাকা

প্লাবিত হচ্ছে ফেনীর নতুন নতুন এলাকা

সংগৃহীত

বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামের নতুন নতুন এলাকা। ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। নতুন করে বাঁধের কোন স্থানে ভাঙন দেখা না দিলেও ভারতের উজান থেকে এখনও পানি আসছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত সোমবার মুহুরী ও কুহুয়া নদীর তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে দুই উপজেলার আট গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে হাজারো গ্রামবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার পানির বেগ কমে গেলেও ভাঙা স্থান দিয়ে লোকালয় পানি প্রবেশ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এই এলাকায় যে বন্যা হয় সেটিকে ‘ফ্লাশ ফ্লাড’ বলা হয়। বন্যার পানি একদিক দিয়ে প্রবেশ করে আরেক দিক দিয়ে নেমে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায়। নেমে যাওয়ার সময় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়।
 
গত সোমবার ভোর সাড়ে চারটির দিকে মুহুরী নদীর ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া, উত্তর দৌলতপুর ও দুপুরে পরশুরামের  কহুয়া নদীর অলকায় বাঁধ ভেঙে ৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে পাহাড়ি ঢলে এসব এলাকার গ্রামীণ সড়ক, মাছের ঘের, কাঁচা ঘর-বাড়ি, পোল্ট্রি খামারসহ ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষি বিভাগ বলছে, বন্যায় ৭০ হেক্টর রোপা আমন, তিন হেক্টর সবজি ও সাড়ে ৩ হেক্টর সবজির আবাদ পানির নীচে রয়েছে। পানি নামলে বুঝা যাবে ক্ষয়ক্ষতির আসল চিত্র।

গত দুই দিনে পানিবন্দি মানুষ রয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে। স্থানীয়রা বন্যার জন্য দুষছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। তারা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতির কারণেই প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে তাদের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করার কারণেই প্রতিবছর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এসব এলাকা প্লাবিত হয়। তাদের কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়। স্থানীয়রা জানান, বন্যা হলেই প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কিছু শুকনো খাবার আমাদের জন্য নিয়ে আসেন। তারা বলেন, ‘আমরা ত্রাণ চাই না, আমরা চাই এর স্থায়ী সমাধান। আমরা চাই টেকসই বাঁধ।’
 
পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ৭৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মেগা প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেটি পাস হলেই এখানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। পানি নামলেই দ্রুত ভাঙা বাঁধের স্থান মেরামত করা হবে। নদীর জন্য যে জায়গা প্রয়োজন আছে সেটা এখানে না থাকার কারণেই নদী ভাঙছে। এখানে জায়গা সংকীর্ণ হয়ে গেছে। নদীটা বড় করে দেয়া গেলেই হয়তো ভাঙন রোধ সম্ভব হবে। 

এদিকে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ফেনী ১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। এসময় তিনি বন্যার্তদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।