ইন্নালিল্লাহ কোথায় কেন পড়তে হয়

ইন্নালিল্লাহ কোথায় কেন পড়তে হয়

ফাইল ছবি

কোনো মানুষ মারা গেলে আমরা পড়ি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ এর অর্থ হলো, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য (আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি) এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাব।

বেশিরভাগ মানুষ, ইন্নালিল্লাহ-এর অর্থ জানে না। তারা মনে করে, ইন্না লিল্লাহ পড়ার মধ্য দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হচ্ছে। অথচ, ইন্না লিল্লাহ পড়ার মধ্য দিয়ে দোয়া/কল্যাণ কামনা করা বোঝায় না।

আল-কোরআনে সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তারা (মুমিনগণ) কোনো বিপদ এলে বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ এর মানে হলো, মৃত্যু বা অন্য কোনো বিপদ এলে মুমিন হতাশাগ্রস্ত হয় না। চরম হতাশায় ভেঙে পড়ে না। বরং ধৈর্য ধারণ করে।

মুমিন জানে নশ্বর পৃথিবীতে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। সব কিছুই একদিন ধ্বংস হবে, নষ্ট হবে। বিপদ আসবে, ধন সম্পদ ফসলের ক্ষতি সাধন হবে। আল্লাহর সৃষ্ট মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। বোঝা গেল, বিপদে/মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ বলার মাধ্যমে আমরা দুটো উপকার পাই।

১. আমরা মেনে নেই, আমাদের উপরে আসা বিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে। এটা আল্লাহরই সিদ্ধান্ত। তাই ইন্নালিল্লাহ বলার মাধ্যমে আমরা মনে প্রশান্তি লাভ করি। কারণ আমরা জানি, কল্যাণ-অকল্যাণের সঠিক জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই আছে। তিনিই জানেন, আমাদের কিসে কল্যাণ আর কিসে অকল্যাণ।

বিপদে ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে পারি। যার ফলে, এর বিনিময়ে তিনি আমাদের উত্তম পুরস্কার দান করবেন। সেটা দুনিয়াতেও হতে পারে। আখিরাতেও হতে পারে।

২. পাশাপাশি ইন্নালিল্লাহ বলার মাধ্যমে আমরা নিজেদের স্মরণ করিয়ে দেই, এই পৃথিবীতে আমরা কেউই চিরদিন থাকব না। স্বাভাবিক নিয়মেই একদিন আমরাও আল্লাহর কাছে ফিরে যাব।

যিনি ইন্তেকাল করেছেন, তার ডাক এসেছে। যে কোনো সময় আমাদেরও ডাক আসবে। ইন্নালিল্লাহ বলাটা এক ধরনের সেল্ফ রিমাইন্ডার। কোনো দোয়া নয়। তাই, যে কারও মৃত্যুতেই ইন্না লিল্লাহ বলা যায়। এতে কোনো আপত্তি নেই।

লোকেরা না বোঝার কারণে, পছন্দের লোকের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ বলে। অপছন্দের লোকের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ বলাতে আপত্তি করে। অথচ, ইন্নালিল্লাহ বলার মাধ্যমে কারও জন্য দোয়া/কল্যাণ কামনা করা হয় না।