যশোরে প্রথমবারের মতো এইচআইভি আক্রান্ত নারীর সন্তান প্রসব

যশোরে প্রথমবারের মতো এইচআইভি আক্রান্ত নারীর সন্তান প্রসব

যশোরে প্রথমবারের মতো এইচআইভি আক্রান্ত নারীর সন্তান প্রসব

যশোরে এই প্রথম এইচ আই ভি আক্রান্ত রোগীর সন্তান প্রসব হয়েছে। গতকাল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের সিজার করা হয়। বর্তমানে মা ও বাচ্চা উভয়েই সুস্থ আছেন বলে জানান হাসপাতালের আরএমও।

যশোর সদর উপজেলার বাসিন্দা এই গর্ভবতী নারী সন্তান সম্ভবা হওয়ার পর শুধুমাত্র একবার এ্ই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চেক আপ করাতে আসেন। এরপর তিনি আর আসেননি। গর্ভধারণের ৩৮ সপ্তাহ পর গত সপ্তাহে তার শরীর দূর্বল লাগাতে তিনি যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চেক আপ করাতে আসেন। সেখানে এসে তার পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় যে সে,রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে তাছাড়া সে এইচ আই ভি তে আক্রান্ত। পরবর্তীতে ডাক্তাররা তাকে রক্ত দেয়া সহ বাচ্চার ঝুঁকি কমানোর জন্য এন্টিভাইরাল থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। তার শারীরিক অবস্থা একটু স্বাভাবিক হলেই গতকাল তার অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড এই অপারেশন সম্পন্ন করেন। বোর্ডের সদস্যরা হলেন, হাসপাতালের আবাসিক সার্জন গাইনি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. নিলুফার ইয়াসমিন, হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জাফর ইকবাল, ডা. মাসকিয়া জান্নাতি, জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ইদ্রিস আলী ও রেজিস্ট্রার ডা. গোলাম মোর্তুজা।

এটিই এই নারীর প্রথম সন্তান। তার বিয়ের তিন মাস পর তিনি সন্তান সম্ভবা হন। পরবর্তীতে ডাক্তাররা তার স্বামীর এইচ আই ভি টেস্ট করিয়ে সেটি নেগেটিভ পান। তবে চিকিৎসকরা জানান,বাচ্চার এইচ আই ভি টেস্ট না করানো পর্যন্ত জানা সম্ভব নয় সে আক্রান্ত কিনা,যদি বাচ্চাটিও আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তাকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করা সম্ভব। বর্তমানে নারীটি যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। তার অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি এইচ আই ভি চিকিৎসাও চলছে।

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান,যশোরে এই প্রথমবারের মত এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসব করলেন।এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর এই অপারেশন অত্যন্ত সংবেদনশীল। তবে ঝুঁকিমুক্তভাবে তা সম্পন্ন হয়েছে। তার পরিবারকে আতংকিত না হওয়ার জন্যও কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। আর তাছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে শুধু গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেই এই আই ভি টেষ্ট নয়,সকল অপারেশনের ক্ষেত্রে এই টেষ্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে তিনি আরও জানান। এই নারীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ সরকারীভাবেই করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।

২০০৬ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত যশোরে ১৪৬ জন এই আই ভি আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩ জন মারা গেছে।