খাদ্যশস্য রপ্তানিতে কড়াকড়ি ভারত

খাদ্যশস্য রপ্তানিতে কড়াকড়ি ভারত

ফাইল ছবি

চলতি বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বিভিন্ন অত্যাবশ্যক পণ্য, যেমন- চাল, ডাল, চিনি, শাকসবজির দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই এসব খাদ্যশস্য রপ্তানি কমিয়ে দিতে পারে ভারত।

বৃষ্টিপাতের অভাব শুধু তাদের ওপরই নয়, নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সারা বিশ্বেই। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল, গম ও চিনি উৎপাদনকারী দেশ ভারত। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ফসল উৎপাদন কমে গেলে এসব পণ্য রপ্তানিতে আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশটি।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ভারত এরই মধ্যে চাল রপ্তানি সীমিত করেছে, পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ডাল রপ্তানিতে বিশেষ অনুমতি বাধ্যতামূলক করেছে। একই কারণে হয়তো ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে চিনি রপ্তানিতেও।

এর ফলে সামগ্রিক খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বাড়তে পারে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভারতে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারির পর থেকে সর্বোচ্চ।

বিগত আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত নিয়ে এবারের বর্ষা মৌসুম শেষ করতে চলেছে ভারত। এল নিনোর প্রভাবে এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হতে পারে এবারের আগস্ট মাসে।

একই কারণে সেপ্টেম্বরেও বৃষ্টিপাত হতে পারে সামান্য। সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ভারতের আবহাওয়া বিভাগের দুই কর্মকর্তা।

ফলে সামগ্রিকভাবে খড়ার প্রভাব পড়তে পারে। ভারতের জন্য বর্ষাকাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির চাষাবাদ এবং জলাধার ও জলাশয়গুলো ফের পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ৭০ শতাংশ পানিই আসে বৃষ্টিপাত থেকে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির প্রায় অর্ধেক কৃষিজমিতে সেচের অভাব রয়েছে।

এ বছর আট শতাংশ কম বৃষ্টিপাত নিয়ে জুন-সেপ্টেম্বরের বর্ষা মৌসুম শেষ হচ্ছে ভারতে। ২০১৫ সালের পর থেকে বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। আট বছর আগের সেই সময়েও বৃষ্টিপাত কম হওয়ার পেছনে ভূমিকা ছিল এল নিনোর।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পেরু-ইকুয়েডর উপকূল বরাবর কোনো কোনো বছর এক প্রকার দক্ষিণমুখী উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। এটিকে এল নিনো বলা হয়ে থাকে। এর বিপরীত দশার নাম লা নিনা। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল সামুদ্রিক স্রোত তৈরি হয়।

সাধারত ৪ থেকে ১০ বছর পরপর এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি সৃষ্টি হলে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং কোনো কোনো এলাকায় খরাও দেখা দিতে পারে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো সৃষ্টি হতে শুরু করবে। ২০১৮-১৯ সালেও এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল।