দাঁতে কখন রুট ক্যানেল চিকিৎসা প্রয়োজন

দাঁতে কখন রুট ক্যানেল চিকিৎসা প্রয়োজন

সংগৃহীত

ক্যারিজ বা আঘাতজনিত কারণে দাঁতের স্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কিংবা দন্তমজ্জায় বা পাল্পে ইনফেকশন হয়। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার দরকার হয়ে পড়ে।

রুট ক্যানেল চিকিৎসা যে কারণে

অনেক সময় দেখা যায়, ক্যারিজ শুধু রোগীর দাঁতের অ্যানামেল বা ডেন্টিনের সামান্য অংশে ছড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে ওই অংশটুকু পরিষ্কার করে শুধু ফিলিং করে দিলেই চলে। যদি দেখা যায় ইনফেকশন দাঁতের পাল্প বা দন্তমজ্জা পর্যন্ত ছড়িয়েছে এবং রোগী তীব্র ব্যথা অনুভব করছেন অথবা কোনো ধরনের আঘাতে রোগীর দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দাঁতের রং বদলে যাচ্ছে– সে ক্ষেত্রে রুট ক্যানেল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

রুট ক্যানেল চিকিৎসা নিয়ে অহেতুক ভীতি

অধিকাংশ রোগী রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট অপেক্ষা দাঁত ফেলে দেওয়াকে বেশি পছন্দ করেন। এর বেশির ভাগ কারণই হলো ব্যথার আতঙ্ক। অথচ মজার ব্যাপার হলো, রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্টে ব্যথা পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। একজন দন্ত বিশেষজ্ঞ যদি কাজ শুরুর আগে রোগীর আক্রান্ত চোয়াল লোকাল অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে সঠিকভাবে অবশ করে নেন, কোনো প্রকার ব্যথা অনুভব করার কথা নয়। বরং কারণ ছাড়া দাঁত ফেলে দিলে পরে ওই জায়গার আশপাশের দাঁত ফাঁকা হয়ে যাওয়া, কথা বলতে ও খাওয়া-দাওয়া করতে সমস্যাসহ নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।

রুট ক্যানেল-পরবর্তী চিকিৎসা

রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্টে দাঁতের ভেতরের সম্পূর্ণ দন্তমজ্জাটুকু বের করে ফেলে দাঁতটি মৃত করে ফেলে দেওয়া হয়। ফলে দাঁতটি খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে। এ জন্য দাঁতের ওপর এক ধরনের কৃত্রিম মুকুট পরানো হয়, যাকে ক্রাউন বা ক্যাপ বলে; যা মৃত দাঁতের স্থায়িত্বকে বহু বছর বাড়িয়ে দেয়।

দাঁতে ক্রাউন যেভাবে করা হয়

রুট ক্যানেলের পর দাঁতটিকে সঠিক আকৃতিতে কেটে নির্দিষ্ট আকার দেওয়া হয়। এরপর দাঁতের রঙের সঙ্গে রং নির্ধারণ করে দাঁতটির সঠিক ছাপ নিয়ে সেটা ডেন্টাল ল্যাব থেকে ওই আকৃতির ও নির্ধারিত রঙের ক্যাপ তৈরি করা হয়; যা ওই দাঁতের ওপর বসিয়ে বিশেষ ধরনের ডেন্টাল সিমেন্ট দিয়ে আটকিয়ে দেওয়া হয়। যদি আপনার ডেন্টাল সার্জন মনে করেন, আপনার দাঁতের ওপরের অংশ অনেক বেশি ভাঙা বা দাঁত অনেক দুর্বল, সে ক্ষেত্রে অনেক সময় দাঁতের গোড়ায় একটি মেটালের খুঁটি বসিয়েও ক্রাউন করা হয়। একে পোস্ট ক্রাউন বলে। এতে দাঁতটি আরও মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল।