পবিত্র কুরআন ছিঁড়ে বা পুড়ে গেলে যা করনীয়

পবিত্র কুরআন ছিঁড়ে বা পুড়ে গেলে যা করনীয়

সংগৃহীত

পবিত্র কুরআন, মুসলমান ধর্মের মানুষের কাছে এক মহান গ্রন্থ বা পথ নির্দেশিকা। কুরআন আল্লাহর বাণী এবং তা হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নিকট প্রেরিত হয়। কুরআন অতীব পবিত্র ও সম্মানের বস্তু হওয়ায় কোনভাবেই যেন এ গ্রন্থের সম্মানহানি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখেন মুসলমান ধর্মের মানুষেরা।

কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা ছিড়ে যায় অথবা লেখা ঝাপসা হয়ে আসে। ঘরে কিংবা মসজিদেও এমন অনেক পুরোনো কুরআন শরিফ চোখে পড়ে। এ অবস্থায় পুরোনো বা ছেঁড়া এসব কুরআন শরিফ কী করতে হবে? এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনাই বা কী? পুরাতন,ছেড়া-ফাটা কুরআন মেরামত অথবা বাইন্ডিং করে ব্যবহার উপযোগী করার চেষ্টা করতে হবে। এতে একটি নষ্ট হওয়ার উপক্রম আল্লাহর কিতাবের প্রতি যত্ন নেয়ার কারণে ইনশাআল্লাহ সওয়াব পাওয়া যাবে।

পুরোনো ছেঁড়া বা দুর্বল কোরআন যা মেরামতের অযোগ্য হলে করনীয়-

১. হাম্বলি ও হানাফি মাজহাব অনুযায়ী মেরামতের অযোগ্য কোরআনকে মৃত মুসলমানের ন্যায় মাটিতে দাফন করতে হবে। (আদ-দুররুল মুখতার, ১/১৯১) তবে তা হতে হবে পবিত্র মাটিতে এবং লোকজন চলাচলের পথে নয়। যাতে মানুষের পায়ে পিস্ট না হয়।

হাম্বলি মাজহাবের ইমাম আল্লামা মনসুর আল বাহুতি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, দাফন করার আগে অবশিষ্ট কোরআনকে ছিঁড়ে ফেলতে হবে। আবু আল-জাওযা তার পুরাতন কোরআন মসজিদে দাফন করেছেন। ইবনে তাইমিয়াহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি মাজমু মুমিন বান্দাকে যেভাবে মাটিতে দাফন করা হয়; ঠিক সেভাবে দাফনের কথা বলেছেন। (আল-ফাতাওয়া ১২/৫৯৯)

২. পড়ার অযোগ্য কোরআনের পৃষ্ঠাগুলো পুড়ে ফেলার পক্ষে মতামত দিয়েছেন মালেকি ও শাফেয়ি মাজহাবের ইমামরা। এ ক্ষেত্রে তারা ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর কোরআন পোড়ানোর অফিসিয়াল নির্দেশকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। (বুখারি ৪৯৮৮)

হজরত ইবনু আল-বাত্তাল রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর নির্দেশের আলোকে ব্যবহার অযোগ্য কোরআনকে পুড়ে ফেলা জায়েজ সাব্যস্ত হয়েছে। এর দ্বারা কোরআনকে সম্মান করা হয় এবং আল্লাহর কালামকে মানুষের পায়ে পিষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা হয়। (শরহু সহিহ আল-বুখারি ১০/২২৬)