মসজিদে চুরি, চোরের কান্ডে হতবাক সবাই

মসজিদে চুরি, চোরের কান্ডে হতবাক সবাই

ছবিঃ সংগৃহীত।

‘আমি পেশাদার চোর নয়, আমার মা অসুস্থ মায়ের জন্য চুরি করিলাম। আমাকে সবাই মাফ করে দিবেন, আমি এইচএসসি পাশ। কিন্তু জীবনে কিছু করতে পারিনি।’ চোর চুরির শেষে একটি চিরকুট লিখে মসজিদে রেখে যান। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর দৌলৎগঞ্জ থানা জামে মসজিদে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর মসজিদের সামনের গ্লাসের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতে গিয়ে রক্ষাক্ত হয়েছে। ঘটনাটি রবিবার রাতের।

মসজিদের রশিদ বই, সাউন্ড সিস্টেম, ইয়ার ফোন, মাইক সেটের বিশেষ অংক চুরি করে নিয়ে যায়। অন্যদিকে চোর ঘটনার সময় মসজিদের বাইরে থাকা দান বাক্সটি ভাঙ্গার চেষ্টা করে। চুরির শেষে চিরকুটে লিখে যায়।

দৌলৎগঞ্জ থানা জামে মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিন প্রতিদিনের মত শনিবার ঈশার সময়ে মসজিদের ইবাদত বন্দেগী শেষে মসজিদের দরজা তালাবদ্ধ করে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যান।

পরবর্তীতে রোববার ফজর নামাজের আজান দিতে গিয়ে মসজিদের মোয়াজ্জিন আরাফাত হোসেন দেখতে পান যে,মসজিদের গ্লাসের তালা ভাঙ্গা এবং পাশে রক্ত পড়ে আছে। মসজিদের ভিতরে প্রেবশ করে দেখেন বেশ কিছু মালামাল চুরি হয়ে গেছে এবং দান বাক্স ভাঙ্গার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে মসজিদের একে একে মুসল্লিরা আসেন এবং ঘটনা দেখেন ও শোনেন। মসজিদের চুরির ঘটনা এবং মসজিদের ভিতরে রক্তাক্ত দেখে সবাই প্রথমদিকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চোর মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওযার সময় একটি খাতায় লিখে যায় যে, সে পেশাদার চোর নয়, তার মা অসুস্থ তাই চুরি করতে বাধ্য হয়েছে।

মসজিদের সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ঘটনার পর আমরা চোরকে খোঁজাখুজি করতে থাকি। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি এক যুবক মারাত্মক রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর পাঠানো হয়েছে। তবে তার নাম হাসপাতালে আপন বলে পরিচয় দিয়েছে। তার বাড়ী কখনও হাসাদহে ও কখনও কোটচাঁদপুর বলে জানিয়েছে। পরে জীবননগর থানা পুলিশ আমার মসজিদ থেকে চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার করেন।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবিদ হোসেন বলেন, থানার টহল পুলিশ রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় তাকে পায়। এ সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। টহল পুলিশ তাকে জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। এরপর অবস্থা অবনতি দেখে চিকিৎসক যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করেন।

ওসি আরো জানান, চোরকে সনাক্ত করে মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর শহরে। সে নেশায় আসক্ত। তার মায়ের সাথে কথা হয়েছে। অসুস্থ বলে মনে হয়নি। তার মা বলেছেন, ছেলেটি মাঝে মাঝে কোথায় চলে যায়। আর প্রায়ই এ রকম করে। মসজিদ কমিটিকে মামলা করতে বলেছিলাম। কমিটি মামলা করবেনা বলে জানিয়েছে।