টিএসসিসিতে কক্ষ নেই ইবির সামাজিক সংগঠনগুলোর, বরাদ্দের দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি

টিএসসিসিতে কক্ষ নেই ইবির সামাজিক সংগঠনগুলোর, বরাদ্দের দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি

টিএসসিসিতে কক্ষ নেই ইবির সামাজিক সংগঠনগুলোর, বরাদ্দের দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি

টিএসসিসিতে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়াসহ ১০টি দাবি নিয়ে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সংগঠনগুলো। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ(ঐক্যমঞ্চ) এর পক্ষ থেকে রবিবার উপাচার্য বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের কার্যালায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘ঐক্যমঞ্চের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে আসা পুরোনো সংগঠনগুলোসহ ২০টি অধিক সংগঠন রয়েছে।

এই সংগঠন সমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননে প্রগতিশীলতার চর্চা, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব গড়ে তোলা, এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ, চাকরির বাজারে যোগ্যতাসম্পন্ন মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ক্যাম্পাসে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত আয়োজন করা হয়ে থাকে সেমিনার বা প্রশিক্ষণ কর্মশালা। কিন্তু দুঃখের বিষয় সংগঠনগুলোর নির্দিষ্ট কোনো কক্ষ না থাকায় তাদেরকে বাইরে উন্মুক্ত পরিবেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। ফলে কর্মশালাসহ নিয়মিত কর্মসূচি পালনে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রীষ্ম ও বর্ষায় রোদ ও বৃষ্টির কারণে বাইরে প্রোগ্রাম করা কষ্ট সাধ্য। কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুকূল পরিবেশ না পাওয়ায় সংগঠনগুলো তাদের গতিশীলতা হারাচ্ছে। অনেক সময় কক্ষের অনুমতি নেওয়ার দীর্ঘ বিড়ম্বনায় অনুষ্ঠান করার সাহস হারাচ্ছে।

এছাড়াও নির্দিষ্ট কোনো কক্ষ না থাকায় সংগঠনগুলোর নিজস্ব প্রয়োজনীয় সম্পদ ও দলিলপত্র হারিয়ে ফেলছে। এছাড়া নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়ে বর্তমান বন্ধের দিনে টিএসসিসিতে কোনো রকম প্রোগ্রাম করার অনুমতি মিলছে না। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠান গুলো পরিচালনার জন্য একটি সাউন্ড সিস্টেম থাকলেও দীর্ঘ দিন যাবত তার সুবিধা পাচ্ছে না আয়োজকেরা। স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘এছাড়া টিএসসিসি সুন্দরতম স্থাপনা হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় অনেক বিড়ম্বনায় যেমন, এখানে বিশাল একটি ক্যাফেটেরিয়া থাকলেও নিয়মিত সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। নেই কোনো সুপেয় পানির ব্যবস্থা। টয়লেটগুলো অপরিষ্কার থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

একটি টয়লেট সংস্কার হলেও তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা এইসব সমস্যার কথা টিএসসিসি পরিচালক বরাবর বারবার জানানোর পরেও কোনো সুফল না পাওয়ায় আমাদের সর্বশেষ ভরসা আপনার নিকট আমরা হাজির হয়েছি।’ স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিসমূহ হলো: টিএসসিসিতে নিবন্ধিত সংগঠনগুলোকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ (ঐক্যমঞ্চ) এর জন্য একটি অফিস কক্ষ ও একটি সভা কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া, অডিটোরিয়াম এর সাউন্ড সিস্টেম এর সমস্যা সমাধান এবং মাল্টিমিডিয়া ব্যবস্থা করা, ক্যাফেটেরিয়া চালুসহ এ সংক্রান্ত অন্য সমস্যা সমাধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক বাজেটে সামাজিক সংগঠনগুলোকে যুক্ত করা, টিএসসিসিতে অনুষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি প্রদানের হয়রানি বন্ধ করা, টিএসসিসি এর ওয়াশরুমগুলো উন্মুক্ত করা ও ব্যবহার উপযোগী করা, টিএসসিসিতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য অডিটোরিয়াম ও টিএসসিসির কক্ষ ভাড়া ছাড় দেওয়া এবং ক্যাম্পাস বন্ধের দিনেও টিএসসিসিতে অনুষ্ঠান পরিচালনার অনুমতি প্রদান এ বিষয়ে ঐক্যমঞ্চের আহবায়ক ইয়াসিরুল কবির সৌরভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠন গুলোর গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও টিএসসিসির বিভিন্ন সমস্যাগুলোর সমাধান চেয়ে আমরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে সংগঠনগুলোর গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

একইসাথে সংগঠনগুলোতে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হবে। স্মারকলিপি গ্রহণকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো। যদি পর্যাপ্ত কক্ষ থাকে তাহলে বরাদ্দ দেবো।’