বাংলাদেশ ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য

বাংলাদেশ ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য

ছবিঃ সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ভ্রমণ বিষয়ে যে সতর্কতা জারি করেছে; সেটা তাদের বিষয়। 

আমরা শান্তিপ্রিয় দেশ, বরং আমাদের নাগরিকরাই অন্যান্য দেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।

শনিবার বিকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ডা. অরূপ রতন চৌধুরীর মিউজিক ভিডিওর প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ভ্রমণ বিষয়ে একটি সতর্কতা জারি করেছে; এটা তাদের বিষয়। তারা সমসাময়িক বিভিন্ন দেশে এমন ভ্রমণ সতর্কতা তাদের নাগরিকদের জন্য জারি করে। কারণ তাদের নাগরিকদের দায়বদ্ধতা নিতে চায় না। যদি কোনো অঘটন ঘটে, যেন কেউ দোষী করতে না পারে। এটা তাদের বিষয়, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের দেশ খুব শান্তিপ্রিয়।

 

 

তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাস্তাঘাটে কাউকে গুলি করে মারা হয় না। অনুষ্ঠানে, শপিংমলে, পাব, রেস্তোরাঁ, স্কুলে কাউকে গুলি করে মারা হয় না। এ ধরনের উদাহরণ খুব কম দেশেই আছে। সুতরাং এখানে কারও কোনো ভয়ের কারণ নেই। বরং আমাদের দেশের নাগরিকরা যখন অন্যান্য দেশে যায়, কখনো কখনো সেখানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।

 

আমাদের দেশে যারা আছে, আমরা তাদের সেফটি ও সিকিউরিটি নিশ্চিত করছি এবং করব। আমাদের এ ধরনের অঘটন কখনো হয় না বলেও জানান তিনি।

 

মন্ত্রী বলেন, কেউ হয়তো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে বিভিন্ন রকম উদ্যোগ নেয় এবং এসব হয়তো সেসব উদ্যোগেরই এক-একটি অংশ বিশেষ। সুতরাং এসব ভুলে যান। ওরা কী বলল না বলল সেটা তাদের বিষয়।

 

 

নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা একটা নির্বাচন খেলা। বিভিন্ন দেশ লোক পাঠানোর কথা বলছে। তারাই উদ্যোগ নিয়েছেন যে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবেন। তারপরে বলছেন তাদের টাকা নাই। ইউরোপিয়ানরা বলছে আমাদের টাকা নাই, বাজেট নাই, আমরা বেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারব না। বাংলাদেশ যদি উনাদের আনা-নেওয়ার পয়সা দেয়, এখানে থাকা-খাওয়ার, হোটেলের পয়সা দেয়, তাহলে তারা কিছু লোক পাঠাতে পারে।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু গতবার ছিল ২৫ হাজার নির্বাচন পর্যবেক্ষক, এতজনকে আমরা খাওয়াতে পারব না, আনতেও পারব না। অনেক খরচ। আর তারা আসবেন, ঘুরে বেড়াবেন, আমরা খরচ দিতে যাব কেন? আমাদের মানুষের প্রতি বিশ্বাস আপনাদের থাকা উচিত। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি বিশ্বাস যদি থাকে, বিদেশি এসে কী বলল না বলল সেটা কোনো বিষয় না। আমরা জনগণের প্রতি আস্থা রাখি। জনগণের ভোট জনগণ যাকে খুশি তাকে দেবে। এটা হলেই হলো। এর জন্য বাইরের কোনো সার্টিফিকেট আমাদের দরকার নাই।

 

 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ভ্রমণে নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বৃহস্পতিবার পুনরায় ২ মাত্রার এই সতর্কতা জারি করেছে। হালনাগাদ করা এই ভ্রমণ সতর্কতায় বলা হয়েছে- অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ ভ্রমণে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

 

এছাড়া বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে গোষ্ঠীগত সহিংসতা, অপরাধ, সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা, অপহরণসহ নিরাপত্তাজনিত অন্যান্য ঝুঁকি থাকার কথা উল্লেখ করে সেখানে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য (৩ মাত্রার সতর্কতা) নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।