রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র জন্মদিন আজ

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র জন্মদিন আজ

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের স্রষ্টা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন এই কবি ও গীতিকার। তার পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের মোংলা থানার মিঠাখালী গ্রামে। তার প্রকৃত নাম শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ।

‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’ নামটি তিনি নিজে গ্রহণ করেন। মা শিরিয়া বেগম। বাবা শেখ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন চিকিৎসক। রুদ্র ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বিএ অনার্স (বাংলা) ও ১৯৮৩ সালে এমএ পাস করেন।

ছাত্রজীবনেই তার দুটি কাব্য ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯) ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১) প্রকাশিত হয়। এ দুটি কাব্য তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। তিনি তার সময়ের সংস্কৃতিকে নিজ কবিতায় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা তার কাব্যে প্রতিফলিত। রুদ্রের জনপ্রিয় কবিতা ‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই/আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি’ গভীর ইতিহাস-চেতনার ছাপ স্পষ্ট।

কাব্যচর্চার পাশাপাশি সংগীত, নাটক, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ রচনাতেও সমান উৎসাহী ছিলেন তিনি। তার কাব্যগ্রন্থ ‘ছোবল’, ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’, ‘মৌলিক মুখোশ’; গল্পগ্রন্থ ‘সোনালি শিশির’ ও নাট্যকাব্য ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ উল্লেখযোগ্য। সাহিত্য-সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮০ সালে তিনি মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন- ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।