ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : তহবিল থাকলেও বরাদ্দ নেই, অনশনে রুগ্ন শিক্ষার্থীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : তহবিল থাকলেও বরাদ্দ নেই, অনশনে রুগ্ন শিক্ষার্থীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : তহবিল থাকলেও বরাদ্দ নেই, অনশনে রুগ্ন শিক্ষার্থীরা

দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য গঠিত তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দের দাবিতে অনশনে বসেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর দেড়টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন তারা। দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আবেদন করে অর্থ না পাওয়া অসুস্থ দুই শিক্ষার্থীও কর্মসূচিতে অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনশন চলছিল।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, চন্দন সাহা ও জহুরুল ইসলাম নামের অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নেন। এর মধ্যে চন্দনের মেরুদ- ভেঙে শরীরের নিচের অংশ অচল। তিনি প্ল্যাকার্ড হাতে হুইল চেয়ারে বসে অনশন করেন। জহুরুলের চোখ টিউমারে আক্রান্ত। দুজনই চিকিৎসার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ে আবেদন করলেও বরাদ্দ পাননি। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ^বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নেন।

প্রথমে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিলেও বিকেল চারটায় সেখান থেকে প্রধান ফটক সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে অবস্থান নেন। দুপুর সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ তাদের সঙ্গে কথা বললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্টভাবে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর দুইশত টাকা করে এই ফান্ডে প্রদান করলেও কর্তৃপক্ষের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছেন না। বিভিন্ন বিভাগের আট শিক্ষার্থী অন্তত ছয়মাস আগে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে কর্তৃপক্ষ আবেদন করলেও নানা জটিলতায় তারা অর্থ বরাদ্দ পাননি।

চোখের জটিল রোগে আক্রান্ত জহুরুল ইসলাম বলেন, টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় আমার এক চোখ নষ্ট হতে বসেছে। এখন অপর চোখটিও নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমি টাকা পাইনি। আজ অসুস্থবস্থায় অনশনে বসতে বাধ্য হলাম।

দূর্ঘটনায় মেরুদন্ডের হাড় মারাত্মকভাবে ভেঙে যাওয়া চন্দন সাহা বলেন, দূর্ঘটনায় আমার শরীরের নিম্নাংশ একবারে অকেজো হয়ে গেছে। ভারতে চিকিৎসা নিতে অনেক খরচ হচ্ছে। চিকিৎসার টাকা চেয়ে প্রশাসন বরাবর আবেদন করলেও তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের ঘুরাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘ফ্যাটাল ডিজিজের নীতিমালা সংক্রান্ত বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। এজন্য নীতিমালা সংশোধনের জন্য ভিসি স্যার একটা কমিটি করে দিয়েছেন। আশা করি খুব দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।’

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে যে নীতিমালা আছে সেটা অনেক বেশি দুর্বোদ্ধ। এটা সংশোধনের মাধ্যমে সহজ করা জরুরী। নীতিমালাটা সহজ হলে আমরা খুব সহজেই তাদেরকে টাকাটা দিতে পারবো।’