হরতাল-অবরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বগুড়ায় তৎপর জেলা প্রশাসন

হরতাল-অবরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বগুড়ায় তৎপর জেলা প্রশাসন

সংগৃহীত

বিএনপি-জামাতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার্থে বগুড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৩২ জন কর্মকর্তা ২৪ ঘণ্টা মাঠে কাজ করেছেন। জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলামের নির্দেশে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যদের আইনগত সহায়তা প্রদানে তারা বগুড়ার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

গত ২৯ অক্টোবর হরতাল পালনের পর একদিন বিরতি দিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গত ৩১ অক্টোবর থেকে তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সড়ক-মহাসড়ক ছাড়াও নৌ ও রেলপথও অবরোধের আওতায় ছিল। এরপর আবারও বিএনপি-জামাত গত ৫ ও ৬ অক্টোবর অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ছয়দিনের হরতাল-অবরোধে সকল ধরণের নাশকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে ছিল বগুড়ার প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি টহলে ছিল র‌্যাব-বিজিবি’র সদস্যরা। 

এদিকে, বুধবার অবরোধ চলাকালে বগুড়ায় ২৪ ঘণ্টা মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন তারা। বৃহস্পতিবারও মাঠে থাকবেন। 

বগুড়ার কয়েকটি এলাকা ঘুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান চোখে পড়েছিল। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এছাড়া ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকেও মাঠে দেখা গেছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাউল করিম জানান, বিএনপি-জামাতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে সকল ধরণের নাশকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বগুড়ার প্রশাসন। ছোট-খাটো ঘটনা ছাড়া বগুড়ায় বড় ধরণের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেয়া হয়নি। প্রশাসন ২৪ ঘণ্টা সতর্ক অবস্থায় থাকায় অবরোধকারীরা ব্যর্থ হয়েছে।
 
তিনি আরও জানান, নাশকতা ঠেকাতে জেলার ১২টি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এক জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। সাথে রয়েছেন পুলিশ প্রশাসন। এছাড়াও বগুড়া সদর এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখানে ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে সার্বক্ষণিক মাঠে আছেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীনসহ সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় ৩টি টিম ৬ ঘণ্টা পর পর ২৪ ঘণ্টা মাঠে কাজ করছেন। 

জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, বগুড়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। 

এছাড়াও অবরোধ চলাকালীন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও নাশকতার তথ্য থাকলে ৯৯৯-এ কল করে তথ্য জানাতে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপি-জামাতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো ধরনের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অবরোধে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষা করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।