ফজরের সুন্নত যথাসময়ে পড়তে না পারলে করণীয়

ফজরের সুন্নত যথাসময়ে পড়তে না পারলে করণীয়

সংগৃহীত

ফজরের সুন্নত নামাজ সুন্নতে মোয়াক্কাদা। অন্য সকল সুন্নতের চেয়ে এর গুরুত্ব বেশি। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে যা কিছু রয়েছে, তার চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম: ৭২৫)

অন্য হাদিসের বর্ণনায়, ‘ঘোড়া যদি তোমাদের রেখে চলেও যায়, তবুও ফজরের দুই রাকাত সুন্নত ত্যাগ করো না।’(আবু দাউদ: ১২৫৮)

ফজরের সুন্নতের গুরুত্ব বেশি হওয়ার কারণে জামাতের ইকামত শুরু হলেও সুন্নত নামাজের নিয়ত করতেন সাহাবিরা। বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিরা ফজরের জামাত শুরু হলেও ফজরের সুন্নত পড়ে নিতেন। যেমন আবু দারদা (রা.)-এর বিষয়ে বলা হয়েছে, ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে (ফজরের) সুন্নত পড়তেন। অতপর মানুষের সাথে জামাতে শরিক হতেন। (শরহু মাআনিল আছার, তহাবি: ১/২৫৬) 

সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সাথে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় তাহলে সুন্নত পড়ে নেবেন। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বেন না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবেন এবং সূর্যোদয়ের পর তা পড়ে নেবেন।

আর যদি ফজর নামাজ কাজা হয়ে যায় সুন্নতসহ ৪ রাকাত কাজা পড়বেন। অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পরে দুই রাকাত করে— মোট চার রাকাত (দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত ফরজ) নামাজ আদায় করবেন। নবীজি (স.) বলেন, ‘যে ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) পড়তে পারে না, সে যেন তা সূর্যোদয়ের পর পড়ে নেয়।’ (তিরমিজি: ৪২৩)

ফিকহের কিতাবে রয়েছে, ছুটে যাওয়া ফজরের নামাজ যদি ওইদিন জোহরের ওয়াক্ত শুর হওয়ার পূর্বেই কাজা করা হয়, তাহলে দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট চার রাকাত পড়তে হবে। আর যদি জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যাওয়ার পর কাজা করা হয়, তাহলে শুধু দুই রাকাত ফরজ পড়তে হবে; সুন্নত পড়ার দরকার নেই। (সূত্র: সুনানে তিরমিজি: ৪২৩; আল-মাবসুত, সারাখসি: ১/১৬১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের ব্যাপারে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।