চল্লিশ বছর আগে যে দিনটি চিরতরে বদলে দিয়েছিল ভারতের ক্রিকেট

চল্লিশ বছর আগে যে দিনটি চিরতরে বদলে দিয়েছিল ভারতের ক্রিকেট

চল্লিশ বছর আগে যে দিনটি চিরতরে বদলে দিয়েছিল ভারতের ক্রিকেট

পর পর দুটো বিশ্বকাপে শোচনীয় ফলাফলের পর ১৯৮৩তে তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলতে ভারত যখন আবার সেই ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেয়, দলের কেউই প্রায় ভাবেননি তারা গ্রুপ স্টেজের গন্ডি পেরোতে পারবেন!

এমন কী, বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচগুলোর পর পরই আমেরিকাতে কয়েকটা প্রদর্শনী আর ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার জন্য চুক্তিতেও সই করে ফেলেন দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।ওপেনিং ব্যাটসম্যান কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত তো নিজের মধুচন্দ্রিমার টিকেট পর্যন্ত বুক করে ফেলেছিলেন।

অথচ ‘৮৩র বিশ্বকাপের ফাইনালে দু’দল মিলিয়ে হায়েস্ট স্কোরার ছিলেন সেই শ্রীকান্ত। দল নকআউট পর্বে পৌঁছে যাওয়ায় নিজের হানিমুনের টিকিট ক্যানসেল করতে হয়েছিল বলে যিনি পরে ক্যাপ্টেন কপিলদেবের কাছে বহুবার অনুযোগ করেছেন, “তোমার কিন্তু ওই টাকাটা আমাকে পকেট থেকে হলেও দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল!”দলে প্রায় সবার কাছে অকল্পনীয় হলেও অধিনায়ক কপিলদেব কিন্তু মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন ভারত টুর্নামেন্টে জেতার ক্ষমতা রাখে।বিশ্বকাপের দিনকয়েক আগেই তাকে কেউ একটা দামী শ্যাম্পেনের বোতল উপহার দিয়েছিল।

কপিল নিজে অ্যালকোহল স্পর্শ করতেন না, কিন্তু টুর্নামেন্ট জিতে আনন্দোল্লাস করবেন বলে সেই বোতলটা অতি সাবধানে ম্যাঞ্চেস্টার থেকে লন্ডন, টানব্রিজ ওয়েলস থেকে নটিংহ্যাম সর্বত্র আগলে আগলে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন।দলের সদস্য কীর্তি আজাদ পরে জানিয়েছেন, “আমরা অনেকবার বলেছিলাম, পাজি, ওটা শুধু শুধু নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ – তার চেয়ে বরং আমাদের দিয়ে দাও! কিন্তু ক্যাপ্টেন কথাটা শুনলেই ভীষণ রেগে যেত!”

২৫ জুন লর্ডসের ফাইনালে অবিশ্বাস্যভাবে জেতার পর কপিল শুধু সেই বোতলটাই খোলেননি, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুহ্যমান ড্রেসিং রুমে গিয়ে আরও চারটে শ্যাম্পেনের বোতল চেয়ে নিয়ে এসেছিলেন।কপিল পরে বলেছেন, “আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যাপ্টেন ক্লাইভ লয়েডকে গিয়ে বললাম তোমরা আজকে এতগুলো শ্যাম্পেনের বোতল দিয়ে কী করবে, তার চেয়ে আমরাই বরং নিয়ে যাই! উনিও কেমন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে বোতলগুলো আমার হাতে তুলে দিলেন।”

তিরাশিতে ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে এই ছোট ছোট ঘটনাগুলো ভারতে প্রায় ‘ফোকলোর’ বা প্রবাদকাহিনিতে পরিণত হয়েছে।বস্তুত ভারতের সেই জয় যে ক্রিকেট দুনিয়ায় বিরাট বড় একটা ‘অঘটন’ ছিল, তা নিয়ে সারা বিশ্বের ক্রিকেট পন্ডিতরা কখনোই দ্বিমত পোষণ করেননি।ভারত ফাইনালে জেতার পরদিন ‘দ্য টাইমস’ তো লিখেছিল ‘কামানের খাদ্য যখন নিজেরাই কামানে পরিণত হল!’

এমন কী সেই দলের ক্রিকেটাররাও পরে বহুবার স্বীকার করেছেন, টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে তারা স্বপ্নেও ভাবেননি তাদের বিশ্বকাপ জেতার আদৌ কোনও আশা আছে!কিন্তু ১৯৮৩-র জুন মাসে ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মে মাত্র সতেরো দিনের ভেতর সব হিসেব উল্টেপাল্টে দিয়েছিল কপিলদেবের দল।ঠিক চল্লিশ বছর আগের সেই দিনটি আসলে ভারতে ক্রিকেট খেলাটাকেও এমনভাবে বদলে দিয়েছে, যেটা তখন হয়তো কল্পনাও করা যায়নি। তাই ১৯৮৩র ২৫শে জুন ছিল সব অর্থেই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ‘ওয়াটারশেড মোমেন্ট’ বা পালাবদলের মুহুর্ত।সেটা কীভাবে আর কোথায় কোথায়, তারই তত্ত্বতালাস থাকছে এই প্রতিবেদনে।

মধ্যবিত্তের স্বপ্ন যখন ক্রিকেট

স্বাধীনতার পরেও বহু বছর ভারতীয় ক্রিকেটে রাজারাজড়াদেরই দাপট ছিল। দলের সেরা ক্রিকেটার যে বা যারাই হোন - গায়কোয়াড়, হোলকার, পাতৌদির মতো বিভিন্ন ছোট-বড় ‘প্রিন্সলি স্টেটে’র শাসকদের জন্যই দলের ক্যাপ্টেন বা ম্যানেজারের পদ বাঁধা থাকত।

তিরাশিতে যে একঝাঁক ক্রিকেটার ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেন, দু-একজন বাদে তারা কিন্তু প্রায় সবাই ছিলেন মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা প্রতিভা।তিরাশির বিশ্বকাপের পর তারা প্রত্যেকেই এক একজন জাতীয় নায়কে পরিণত হন, আর ভারতের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেন ক্রিকেট খেলাটার মধ্যে অপার সম্ভাবনা আছে যা তাদের সন্তানের জীবন বদলে দিতে পারে।

সেই বিশ্বকাপে ভারতের অন্যতম নায়ক মদনলাল বছরকয়েক আগে এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, “বিশ্বকাপ জিতে ফেরার পর দিল্লিতে নিজের পাড়াতে আমি যে সংবর্ধনা পেয়েছিলাম তা কখনো ভুলব না।” “চেনা, আধাচেনা বা সম্পূর্ণ অপরিচিত বহু মানুষ তখন এসে বলতেন আমার ছেলেকেও ক্রিকেট শেখান। সেই তাগিদটাই অবসরের পরে আমাকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলতে উদ্বুদ্ধ করেছিল”, জানিয়েছিলেন তিনি।

বস্তুত তিরাশির পরেই ধীরে ধীরে ভারতের ছোট বড় নানা শহরে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলতে শুরু করে – আর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মতোই এই অ্যাকাডেমিগুলোতেও অভিভাবকরা যেভাবে হোক তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে থাকেন।সোজা কথায়, ক্রিকেটও যে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের জন্য একটা আকর্ষণীয় পেশা হতে পারে, সেটা তিরাশির পর থেকেই বাবা-মা’রা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। পরে শত শত কোটি টাকার টুর্নামেন্ট আইপিএল সেই বিশ্বাসকেই আরও দৃঢ় করেছে।

আর একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তিরাশির পর থেকেই শুধু মুম্বাই-দিল্লি-হায়দ্রাবাদের মতো ক্রিকেট ঘরানায় সমৃদ্ধ কেন্দ্রগুলো থেকেই নয় – ভারতের টিয়ার-টু বা টিয়ার-থ্রি শহরগুলো থেকেও ক্রিকেটাররা উঠে আসতে শুরু করেন।ভারতকে ২০০৭র টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১র ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০১৩র চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জিতিয়ে এ দেশে যিনি কাল্ট ফিগারে পরিণত হয়েছেন সেই মহেন্দ্র সিং ধোনি এর সবচেয়ে বড়উদাহরণ – যিনি উঠে এসেছিলেন রাঁচির মতো ছোট্ট একটা শহরের সাধারণ সরকারি কলোনি থেকে।

কর্পোরেট সংস্থার প্রবেশ

তিরাশির সেই বিশ্বকাপ জয়ের পরই ক্রিকেটের বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দিকে নজর পড়ে ভারতের বড় বড় শিল্প সংস্থাগুলোর।

আজ অবিশ্বাস্য শোনাতে পারে, কিন্তু ’৮৩ সালের আগে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই-এর কোনও কমার্শিয়াল স্পনসর ছিল না, কোনও কোম্পানি তাদের সঙ্গে ‘এনডোর্সমেন্ট কন্ট্রাক্ট’ করতেও এগিয়ে আসেনি।দু’বছর আগে বলিউড পরিচালক কবীর খান ভারতের সেই বিশ্বকাপ জয় নিয়ে ‘এইট্টি থ্রি’ নামে যে মুভিটি বানিয়েছিলেন তাতেও দেখানো হয়েছিল সে সময় ভারতীয় বোর্ড আসলে কোন মান্ধাতার আমলে পড়ে ছিল!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের সেই অভাবিত জয় রাতারাতি সেই পরিস্থিতিটা পাল্টে দিয়েছিল। ভারতীয় দলের জার্সিতে স্পনসর কোম্পানির নাম ছাপা হতে শুরু করে এর কিছুকাল পর থেকেই।তিরাশির বিশ্বকাপে ভারতের ম্যাচগুলোর কমেন্ট্রি এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ ট্রানজিস্টর রেডিওতেই শুনেছিলেন, টিভি তখনও এসেছে একেবারে হাতেগোনা বাড়িতে।টিভিতে লাইভ ক্রিকেট দেখার আকর্ষণটা কোথায়, তিরাশির পরেই ভারতীয়রা সেটা ধীরে ধীরে অবিষ্কার করতে শুরু করেন।

সেই সঙ্গেই ক্রিকেট ম্যাচের মাঝে টেলিভিশন বিজ্ঞাপন দেখানোর চল শুরু হয় – যে সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে থাকে ভারতের নামী ব্র্যান্ডগুলো।টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক অভিজিৎ ঘোষের কথায়, “এরপর যখন ১৯৯১তে ভারতে স্যাটেলাইট টিভি এল, ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে টেলিভিশন কোম্পানিগুলোর চুক্তির অঙ্কটাও এক লাফে রুপি থেকে ডলারে গ্র্যাজুয়েট করে গেল!”

বস্তুত আজকে বিসিসিআই যে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংস্থাগুলোর অন্যতম, তার মূলে আছে টেলিভিশন রাইটস বেচে তাদের পাওয়া কোটি কোটি ডলার অর্থ! আর এর পেছনেও অবধারিতভাবে আছে সেই তিরাশির অবদান।১৯৮৭র বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পুরো সময়টায় (১ অক্টোবর – ৯ নভেম্বর) ভারতে কোনও বড় সিনেমা পর্যন্ত মুক্তি পায়নি – ক্রিকেট দেখতে ব্যস্ত দর্শকরা হলে যাবেন না, এই আশঙ্কায়। সেই ট্র্যাডিশন আজও সমানে চলেছে।

ক্রিকেট যখন খেলা নয়, ধর্ম

আজও কাগজে কলমে ভারতের জাতীয় খেলা হল হকি। তা ছাড়া সত্তর আর আশির দশক পর্যন্তও বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, গোয়ার মতো বিভিন্ন রাজ্যে ফুটবল নিয়ে মাতামাতি ছিল সাঙ্ঘাতিক।কিন্তু তিরাশির পর থেকেই ক্রিকেট ভারতে তার ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’দের পেছনে ফেলতে শুরু করে।

“ইংল্যান্ডে যেমন জনপ্রিয়তায় এক থেকে দশ নম্বর খেলা হল ফুটবল, ভারতে তেমনি প্রথম দশটা জায়গা ক্রিকেটের দখলে। ফুটবল-হকি-টেনিস এগুলো ১১/১২ নম্বরে আসতে পারে, তার আগে কিছুতেই নয়”, বলেছিলেন বিবিসির সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মিহির বোস।আসলে তিরাশির বিশ্বকাপে জেতা এবং তারপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বেনসন হেজেস ট্রফি-সহ বেশ কয়েকটা ওয়ানডে টুর্নামেন্টে সাফল্যই ভারতে ক্রিকেটকে এই তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তায় পৌঁছে দিয়েছিল।

অন্য দিকে ১৯৮০র দশক থেকে এমন কী এশিয়ান স্তরের ফুটবলেও ভারতের বলার মতো তেমন কোনও সাফল্য ছিল না।হকিতে ভারত ১৯৭৫-এ বিশ্বকাপ এবং ১৯৮০তে মস্কো অলিম্পিকে স্বর্ণপদক পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ’৮২-র এশিয়ান গেমসে দিল্লিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে ৭-১ গোলে হারও ভারতীয়দের মনে দগদগে ঘা-র মতো বহুদিন জেগে ছিল।

ফুটবল ও হকির খালি করে দেওয়া এই ফাঁকা জায়গাটা দাপটের সঙ্গে দখল করে নিতে ক্রিকেটের আসলে কোনও অসুবিধেই হয়নি।তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ের চল্লিশ বছর পূর্তিতে ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর টুইট করেছিলেন, “ওই দিনটা আসলে আমাদের বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিল যে আমরাও অন্তত কোনও একটা বিভাগে দুনিয়াতে শ্রেষ্ঠ হতে পারি।”

সেই অবিস্মরণীয় ২৫শে জুনের পর থেকেই ভারতে ক্রিকেট খেলাটা এক ভিন্ন মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।ভারতে ক্রিকেট যে এখন নিছক আর খেলা নয়, ক্রিকেটের মর্যাদা এ দেশে ধর্মের কাছাকাছি – সে কথাও ভারতের সমাজতাত্ত্বিকরা বহুবার বলেছেন।ভারতে ক্রিকেটের নায়করাও তাই দেবতার মর্যাদায় পূজিত হন, তেন্ডুলকর বা কোহলির সামান্যতম সমালোচনাকে তাদের অনুরাগীরা ধর্মীয় অবমাননার মতো অপরাধ বলে গণ্য করেন।

ক্রিকেটের ‘সুপারপাওয়ার’

তিরাশির আগে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের টুকটাক সাফল্য থাকলেও বিশ্ব ক্রিকেটে কেউ তাদের ‘সিরিয়াসলি’ নিত না।আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিচালনায় তখন ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ারই আধিপত্য। আর ক্রিকেট মাঠে সবাই সমীহ করে চলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। অথচ ভারতের সেই বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই ক্রিকেট পরিচালনার দুনিয়াতেও দ্রুত পটপরিবর্তন হতে থাকে।

তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ের কিছুদিন পরেই ভারতীয় বোর্ড হাত মেলায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে – মাত্র চার বছরের মধ্যে পরের বিশ্বকাপটি (১৯৮৭) ইংল্যান্ড থেকে সরিয়ে এনে যৌথভাবে আয়োজন করে দেখায় দুই দেশতিরাশির সেই বিশ্বকাপ ফাইনালের মাত্র এক দশকের মধ্যেই বিশ্ব ক্রিকেটের পরিচালনা সংস্থায় নিজেদের ‘ভেটো’ প্রয়োগের ক্ষমতা হারায় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।১৯৯৬তে ভারতীয় উপমহাদেশ তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ আয়োজন করার কিছুকাল পরেই প্রথমবারের মতো আইসিসি-র প্রেসিডেন্ট হন একজন ভারতীয়, জগমোহন ডালমিয়া।

আজ যে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরাশক্তি বা ‘সুপারপাওয়ার’ ভারত, তা নিয়ে কোনও তর্কই নেই। ঘটনাচক্রে এই মুহুর্তে ক্রিকেটের তিনটি ফর্ম্যাটেই ভারত বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল।ক্রিকেট দুনিয়ার অর্থনৈতিক নার্ভসেন্টারও ভারতেই, যার ভিত গড়ে দিয়েছিল তিরাশির সেই ২৫শে জুন।সেই ফাইনালে ভিভ রিচার্ডস যখন ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন, তখন মদনলালের বলে তার তোলা উঁচু লফট অনেকটা পেছনে দৌড়ে অবিশ্বাস্য ভঙ্গীতে তালুবন্দী করেছিলেন কপিলদেব।

রিচার্ডসকে তখন আউট না-করা গেলে ভারতের আদৌ বিশ্বকাপ জেতা হত কি না, তা নিয়ে ক্রিকেট পন্ডিতদের ঘোর সন্দেহ আছে।ক্রিকেট ভাষ্যকার সুরেশ মেনন তার ঠিক পঁচিশ বছর বাদে লিখেছিলেন, “ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচটা সেদিন কপিলদেব নিয়েছিলেন।”“সেই মুহুর্ত থেকে ক্রিকেট নিজেকে এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে যাতে ভারত খেলাটার সুপারপাওয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।”“আসলে সে দিনের পর থেকে ক্রিকেট কখনোই আর আগের মতো ছিল না!”, লিখেছিলেন মি মেনন।

সূত্র :বিবিসি