বিএনপির পঞ্চম দফা অবরোধ : দুরপাল্লার যান বন্ধ

বিএনপির পঞ্চম দফা অবরোধ : দুরপাল্লার যান বন্ধ

বিএনপির পঞ্চম দফা অবরোধ : দুরপাল্লার যান বন্ধ

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিএনপির ডাকা পঞ্চম দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের আজ প্রথম দিন চলছে।

ঢাকা থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকার মধ্যে সড়কে যান চলাচল বেড়েছে। সকালে স্কুল-অফিস শুরুর সময় কোনো কোনো সড়কে কিছুটা জ্যামও দেখা গেছে।বেশিরভাগ বেসরকারি অফিস, বড় বিপনি বিতানসহ দোকানপাটও খোলা রয়েছে।

ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারগুলো পুরোপুরি ফাঁকা ছিল সকালে। যাত্রী না থাকার কারণে সকাল থেকে কোনো পরিবহন এখান থেকে ছেড়ে যায়নি। এই বাস টার্মিনালটি থেকে সাধারণত দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর দিকে যান চলাচল করে থাকে।বিএনপির ডাকা এর আগের কয়েকটি অবরোধের সময় সকালে রাজধানীতে যে পরিমাণ যান চলাচল দেখা গিয়েছিল, আজ তার চেয়ে বেশি পরিমাণ যান রাস্তায় চলছে।

বিবিসির সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, বুধবার রাস্তায় গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যান চলাচলও বেড়েছে। রাস্তায় অফিসগামী মানুষ এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের বেশ চাপ চোখে পড়েছে।রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর, পান্থপথ, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, আগারগাঁও, শ্যামলী, তেজগাঁও এবং গুলশান এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যান চলাচল স্বাভাবিক দিনের তুলনায় কিছুটা কম।

দূর পাল্লার যান চলাচল মূলত বন্ধ রয়েছে। তবে লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে।এদিকে পঞ্চম দফা অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত মিছিল করেছে বিএনপির মহিলা দল। এই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এছাড়া যশোর, ময়মনসিংহ, মেহেরপুর, চাঁদপুর ও জামালপুরে অবরোধের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীদের মিছিল করার খবর পাওয়া গেছে। সেই সাথে গত রাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল করেছে বলে জানিয়েছে বিএনপির মিডিয়া সেল।বিএনপির ডাকা পঞ্চম দফার এই অবরোধ বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে।

এর আগে সোমবার বিএনপির ডাকা চতুর্থ দফা অবরোধ শেষ হওয়ার পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বুধবার থেকে পঞ্চম দফার এই সর্বাত্মক অবরোধ ঘোষণা করে বিএনপি। এর মধ্যে মঙ্গলবার একদিনের বিরতি দেয়া হয়।গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি।

র‍্যাব জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর ও পরবর্তী সময়ে ঢাকা ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতায় নির্দেশ দেয়ার অভিযোগে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতিসহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বরিশাল সদর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।এদিকে বিএনপির ডাকা পঞ্চম দফার অবরোধ শুরুর আগেই রাজধানীতে কমপক্ষে পাঁচটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কল্যাণপুরের নবাবের বাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় মানারাত পরিবহনের দু’টি বাসে আগুন দেয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্ত্বর এলাকায় গত রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিআরটিসির একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।মিরপুরের দ্বীপনগর বেড়িবাঁধ এলাকায় মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে শুকতারা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।

বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার পর মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায় মোহনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই উপস্থিত জনতা বাসটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের পরদিন (২৯ অক্টোবর) হরতাল পালন করে বিএনপি, তাতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলো সমর্থন দিয়েছিল।

এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর এবং ৫ ও ৬ নভেম্বর আরো দুই দফা সড়ক-রেল-নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ বিএনপি। ওই কর্মসূচির পরে ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ করে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো।আর গত ১২ এবং ১৩ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তারা চতুর্থ দফার অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।সর্বশেষ ১৫ এবং ১৬ নভেম্বর পঞ্চম ধাপের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

সূত্র : বিবিসি