বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’, বন্দরে ৪ নম্বর সংকেত

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’, বন্দরে ৪ নম্বর সংকেত

সংগৃহীত

গভীর নিম্নচাপটি বঙ্গোপসাগরে আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’তে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের ৩৩০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। ঝড়ের কারণে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের অধিকাংশ জায়গায় ভোর থেকে টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রাত থেকেই ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ঘুমে শান্তি এনে দিলেও সকালে কর্মমুখী মানুষদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। সাপ্তাহিক ছুটি হলেও সড়কে কর্মজীবীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এতে রাজধানীর জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরের মধ্যে ‘মিধিলি’ খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি দেশের ১১টি উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ‘মিধিলি’ খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ভোরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৮) আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’তে পরিণত হয়েছে। এটি শুক্রবার ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩० কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।