ওয়ানডে ভবিষ্যতের শঙ্কা কাটাতে পারেনি বিশ্বকাপ

ওয়ানডে ভবিষ্যতের শঙ্কা কাটাতে পারেনি বিশ্বকাপ

ওয়ানডে ভবিষ্যতের শঙ্কা কাটাতে পারেনি বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা শুরু হয়। বিশ্বকাপ শেষেও তার রেশ থেকে গেছে। বিশেষ করে বড় আসরের বাইরে আদৌ দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এই ফর্মেটের ক্রিকেটের প্রয়োজনীয়তা আর আছে কিনা তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ৯২ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ভারতের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেটের জয় স্বাভাবিক ভাবেই স্বাগতিক দর্শকদের হতাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল ম্যাচটিকে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে একপেশে করেই জয়ী হয়েছে। 

যদিও টুর্নামেন্টের শুরুতে কিছু ম্যাচের ঘটনা চির স্মরণীয় হয়ে তাকবে। আফগানিস্তান ৬৯ রানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে অঘটনের জন্ম দেয়। এরপর সেমিফাইনালিস্ট দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাস্ত করে টেস্ট মর্যাদা না পাওয়া নেদারল্যান্ডস। ওয়ানডে ফর্মেটের একটি ইতিবাচক দিক হলো একটি দল একসময় এসে এমন ভাবে ঘুড়ে দাঁড়ানোর ক্ষেত্র তৈরী করে যা টেস্ট ম্যাচে খুব কমই চোখে পড়ে। তার উপর একদিনেই ফলাফল নিষ্পত্তি হওয়ায় ওয়ানডে ফর্মেটের জৌলুশ এখনো অনেকের মধ্যে রয়েছে। 

যদিও টি-টোয়েন্টি  ম্যাচের আকর্ষনে ওয়ানডে ফর্মেটের আবেদন প্রায় হারাতেই বসেছে। বিশেষ করে বিশ^জুড়ে বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি  লিগ খেলে খেলোয়াড়রা আর্থিকভাবে যেভাবে লাভবান হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে ওয়ানডেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলার শঙ্কা থেকেই যায়। ইন্ডিয়ান  প্রিমিয়ার লিগ এক্ষেত্রে উদাহরন হতে পারে। ক্রিকেটের দীর্ঘ ফর্মেটের সাথে টিকে থাকার জোড় লড়াই শুরু থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে আইপিএল। 

এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার নাটকীয় জয়ের ম্যাচটি ছিল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ। ২৯২ রান তাড়া করতে গিয়ে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের ক্ষণ গুনতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে একাই উদ্ধার করেন অল রাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৩ উইকেটের জয়ের ম্যাচটিতে ম্যাক্সওয়েল ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন । তাকে যথার্থ সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ২০২ রানে অপরাজিত জুটি গড়ে মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে যে ইতিহাস রচনা করেছেন ম্যাক্সওয়েল তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

কামিন্স বলেন, ‘এ ব্যপারে কথা বলা সত্যি কঠিন। যেহেতু আজ আমরা জয়ী হয়েছি, সে কারনে এবারের বিশ^কাপে আবারো আমি ওয়ানডের প্রেমে পড়ে গেছি। আমি মনে করি প্রতিটি ম্যাচের দৃশ্যপট একেকটি ভিত রচনা করে দেয়। বিশ্বকাপের তুলনায় এ কারনেই ওয়ানডে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলো কিছুটা হলেও ভিন্ন।’এনিয়ে অষ্টমবারের মত বিশ^কাপের ফাইনালে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ৩০ বছর বয়সী কামিন্স বলেন, ‘বিশ্বকাপের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। আমি নিশ্চিত এর রেশ দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচই বেশ আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। গত দুই মাসে ভারতের মাটিতে বেশ কিছু ভাল ম্যাচ আমরা দেখেছি।’

এবারের বিশ্বকাপের আগে এমসিসি সভাপতি মার্ক নিকোলাস বলেছেন, ‘আমরা জোড়ালোভাবে বিশ্বাস করি শুধুমাত্র বিশ্বকাপেই ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়া উচিৎ। অনেক দেশেই এখন আর এর কোন আকর্ষণ নেই। তার উপর টি-টোয়েন্টি ফর্মেট   একটি শক্তিশালী অবস্থান করে ফেলেছে। মুক্ত বাজারে অর্থই এখন সবকিছুকে জয় করে নিচ্ছে।’