পনের বছরে কোটিপতি প্রতিমন্ত্রী পলক

পনের বছরে কোটিপতি প্রতিমন্ত্রী পলক

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক

সংসদ সদস্য হওয়ার পর গত পনের বছরে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তার স্ত্রীও এখন কোটি টাকার মালিক। এ ছাড়া এই দম্পতির জায়গা-জমিও বেড়েছে বহুগুণ।

নাটোর–৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর দাখিল করা হলফনামায় এসব তথ্য জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জুনাইদ আহমেদ পলক ২০০৮ সালে অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন দুই লাখ টাকার কিছু বেশি। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর নামে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। এখন তা বেড়ে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদ হয়েছে।

২০০৮ সালে পলক বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এবার আয় দেখিয়েছেন ৩২ লাখ টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে বেশি আয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তার পাওয়া সম্মানী, ২১ লাখ টাকার মতো। ব্যাংক জমা/সঞ্চয়পত্র থেকে মুনাফা বাবদ আয় ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া টক শো করে তিনি বছরে ২ লাখ ২ হাজার টাকা আয় করেন। প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর আয় বছরে প্রায় ১৯ লাখ টাকা, যা ২০০৮ সালে ছিল ৮৪ হাজার টাকা। স্ত্রীর আয় কৃষি, স্থাপনা ভাড়া এবং সঞ্চয়পত্রের মতো বিনিয়োগ থেকে।

২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রী পলকের ব্যাংকে ছিল নিজের ২০ হাজার ও স্ত্রীর ১০ হাজার টাকা। এবার নিজের নামে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৮২ হাজার ৪৪৫ টাকার সম্পদের হিসাব উল্লেখ করেছেন পলক।

হলফনামা অনুযায়ী, জুনাইদ আহমেদের হাতে নগদ রয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে ১০ হাজার মার্কিন ডলার, ব্যাংকে জমা আছে প্রায় ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র কেনা আছে ৩০ লাখ টাকার। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে ৯৫ লাখ টাকার মতো। আর স্ত্রীর নামে নগদ টাকা প্রায় ৪৬ লাখ টাকা, ব্যাংকে ৫৪ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ৪৫ লাখ টাকা এবং স্থায়ী আমানত প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা দেখিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

২০০৮ সালে পলক এক বিঘা কৃষি জমি, ১৮ শতাংশ অকৃষিজমি ও একটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক ছিলেন। এখন তার নামে ২৪৩ শতাংশ কৃষিজমি ও আধা শতাংশ অকৃষিজমি রয়েছে। দায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ঋণ। গাড়ি কিনতে ঋণটি নিয়েছিলেন তিনি।

২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর কোনো কৃষিজমি ছিল না। অকৃষিজমি ছিল ১৫ শতাংশ। এখন তার ৯০০ শতাংশ কৃষিজমি ও প্রায় ১৩৭ শতাংশ অকৃষিজমি রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় তার দুটি দোকান ও ১ হাজার ৭২০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

জুনাইদ আহমেদ পলক ২০০৮ সালে প্রথম নাটোর–৩ আসন (সিংড়া) থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও একই আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।