অস্ট্রেলিয়ার নতুন সহ-অধিনায়কের দায়িত্বে হেড

অস্ট্রেলিয়ার নতুন সহ-অধিনায়কের দায়িত্বে হেড

ট্রাভিস হেড

অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে এমনিতেই আলোচনায় ছিল ট্রাভিস হেডের নাম। এবার তা আনুষ্ঠানিক ভিত্তিও পেল। বাঁহাতি এই আগ্রাসী ব্যাটসম্যানকে টেস্ট দলের নতুন সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। 

আগের সহ-অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও আছেন দায়িত্বে। সিনিয়র সহ-অধিনায়ক থাকবেন তিনিই। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে কোনো কারণে না পাওয়া গেলে নেতৃত্ব দেবেন এখনও স্মিথই। তবে তার পাশাপাশিই এবার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘লিডারশিপ গ্রুপ’-এ রাখা হলো হেডকে। 

স্মিথের বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৪। নিয়মিত অধিনায়কের দায়িত্ব তিনি আর পাবেন না বলেই ধারণা করা হয়। কামিন্সের বয়স যদিও কেবল ৩০, তবে তিনিও নানা সময়ে বলেছেন যে লম্বা সময় নেতৃত্বে থাকতে চান না। ফাস্ট বোলার হিসেবে তাকে নিয়ে এক শঙ্কা তো সবসময় আছেই। ২৯ বছর বয়সী হেডকেই পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া।

যৌথ সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে বা হেডের নিজের জন্যও নতুন নয়। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং বিতর্কের পর টিম পেইন যখন অধিনায়ক ছিলেন, দলের ভেতর ভোটাভুটির ভিত্তিতে জশ হেইজেলউড ও মিচেল মার্শকে যৌথভাবে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। পরে পেইনের সময়ই যৌথ সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পান কামিন্স ও হেড।

সেই পথ ধরেই পরে অধিনায়ক হয়ে ওঠেন কামিন্স। কিন্তু ফর্ম হারিয়ে দল থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি সহ-অধিনায়কের দায়িত্বও হারান মার্শ, হেইজেলউড ও হেড। পরে সহ-অধিনায়ক করা হয় স্মিথকে। কামিন্সের অনুপস্থিতিতে গত দুই বছরে চারটি টেস্টে নেতৃত্ব দেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। 

যে ফর্মের কারণে দায়িত্ব হারিয়েছিলেন হেড, সেই ফর্মই এবার তাকে ফিরিয়ে দিল দায়িত্ব। গত দুই বছরে সব সংস্করণেই অস্ট্রেলিয়ার প্রধান পারফরমারদের একজন তিনি। এবার বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পর তো তার বৃহস্পতি বলা যায় তুঙ্গে। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ আগের দিন পেলেন সহ-অধিনায়ক হওয়ার সুখবর।

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট মহলে হেডের নেতৃত্বগুণকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। মাত্র ২১ বছর বয়সেই তাকে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক করা হয়েছিল। শেফিল্ড শিল্ডে ৬২ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বে তিন মৌসুমের ভেতর দুটি শিল্ড ফাইনাল খেলেছে দল। একদিনের ম্যাচের আসরেও দুবার দলকে ফাইনালে তোলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

বিগ ব্যাশে তার নেতৃত্বে ২০১৭-১৮ মৌসুমে শিরোপা জিতেছে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্স। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলকে নানা সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা আছে তার কাউন্টি ক্রিকেটে উস্টারশায়ারের হয়েও। এমনিতেই অস্ট্রেলিয়া দলের ভেতর তুমুল জনপ্রিয় হেড। তাকে সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে দেখার একটা বড় কারণ এটা। পাশাপাশি তার ক্রিকেট মেধার কথাও মনে করিয়ে দিলেন কামিন্স। 

তিনি বলেন, তার যে ব্যক্তিত্ব, দলে যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে, আমরা সবাই তা ভালোবাসি। সে যেভাবে ক্রিকেট খেলে, সেখানেও তা ফুটে ওঠে। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বাধীনতা ফুটে ওঠে সেখানে। খেলাটায় দাপট দেখাতে চায় সে। এটিই সে উপভোগ করে। তার মুখে সবসময় হাসি লেগেই আছে। কখনোই কোনো কিছু অতিরিক্ত সিরিয়াসলি নেয় না। দলীয় মনোবল বাড়ানোর জন্য দলকে এককাট্টা করা ও সতীর্থদের যাদের প্রয়োজন, তাদের কাঁধে হাত রাখার ক্ষেত্রে সে দারুণ একজন।

কামিন্স আরও জানান, কখনও কখনও এমন একজনকে নিয়ে লোকে ভুল বোঝে যে, খেলাটা নিয়ে তার ভাবনা হয়তো গভীর নয়। তবে আমার মনে হয়, সে (হেড) ট্যাকটিক্যালি অসাধারণ। দারুণ একজন নেতা হয়ে ওঠার সব উপকরণই তার মধ্যে আছে, যেমনটি সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বেশ কবছর ধরেই দেখে আসছি আমরা এবং সেটিকেই এখন অস্ট্রেলিয়া দলে খানিকটা আনুষ্ঠানিক রূপ দিলাম আমরা।