হামজার পাসপোর্ট বিড়ম্বনা নিয়ে যা বলছে বাফুফে

হামজার পাসপোর্ট বিড়ম্বনা নিয়ে যা বলছে বাফুফে

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলা নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। অনেক গুঞ্জনের পর এবার হামজা বাংলাদেশের পাসপোর্ট করতে আগ্রহী হয়েছেন। তবে দু’দিন আগে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে গিয়েও শেষ পর্যন্ত পাসপোর্ট আবেদনের কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

হামজার পাসপোর্ট প্রক্রিয়া ও বাংলাদেশ ফুটবল দলে খেলানো নিয়ে কাজ করছে বাফুফে। পাসপোর্ট আবেদনের আগের ধাপ জন্ম নিবন্ধন। সম্প্রতি হামজা বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধনের কাগজ পেয়েছেন। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে জানিয়েছেন, ‘হামজা ও তার পরিবার বাংলাদেশের ব্যাপারে বেশ ইতিবাচক। হামজার মতো খেলোয়াড় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তাই আমরাও আন্তরিকতার সঙ্গে এটা নিয়ে কাজ করছি। কিছুদিন আগে হামজার পরিবার তার জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছে, এতে আমরা সহায়তা করেছি। সামনের প্রক্রিয়াগুলোতেও পাশে থাকব।’

জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে অন্যতম শর্ত পাসপোর্ট। প্রবাসী এবং বংশোদ্ভুত হলে আরও অনেক শর্ত আছে ফিফার। শুধু দেশের টানে ও পরিবারের ইচ্ছায় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান হামজা। জাতীয় দলে খেলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, শুধু প্রাপ্তি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও ভালোবাসা অর্জন। হামজা প্রাথমিক শর্ত পূরণে পাসপোর্ট করতে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। নটিংহ্যাম থেকে লন্ডনের অনেক দূরত্ব। এত দূর থেকে গিয়ে এবং অপেক্ষা করেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেননি। খানিকটা বিড়ম্বনা ও অতিরিক্ত বিলম্বে ক্ষোভ নিয়েই হাইকমিশন ত্যাগ করেন হামজা ও তার মা।

হামজার পরিবার এই বিড়ম্বনার বিষয়টি বাফুফেকে অবহিত করেছে। বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য। তিনি লন্ডন হাইকমিশনে হামজার পাসপোর্ট সহজ ও দ্রুত সময়ে করার ব্যাপারে কথা বলেছেন। বাফুফে হামজার পরিবার ও লন্ডন দূতাবাস দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ‘এখানে বাফুফের সরাসরি কিছু করার নেই। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছি। হাইকমিশনকে হামজার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা এটি বিবেচনা করে সামনের সপ্তাহে হামজার জন্য বিশেষ সুচি রাখছে’, ব্যাংককে এএফসি কংগ্রেস থেকে বলেন সাধারণ সম্পাদক।

বাফুফে হামজাকে আগামী সোমবার আবারও লন্ডন হাইকমিশনে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তার উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার পরিবার নিয়ে তুরস্কে ঘুরতে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে এসে পাসপোর্টের আবেদন করার সম্ভাবনাই বেশি। পাসপোর্ট আবেদন করতেই ভোগান্তিতে পড়ায় সামনে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আরও কোনো বিড়ম্বনায় পড়েন কি না সেই শঙ্কাও হামজার পরিবারের মনে উঁকি দিয়েছে বলে জানা গেছে। 

হামজা বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেলে বাফুফে ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশনের কাছে ছাড়পত্র চাইবে। কারণ ইংল্যান্ড যুব দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। ইংলিশ ফেডারেশনের ছাড়পত্র পাওয়ার পর বাফুফেকে ফিফায় আবেদন করতে হবে। ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি সবুজ সংকেত দিলেই বাংলাদেশের জার্সি পরে খেলতে আর কোনো বাধা থাকবে না। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের বর্তমান অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও ডিফেন্ডার তারিক কাজী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী ফুটবলার। তারাও একইভাবে নিয়ম মেনে বাংলাদেশ দলে খেলছেন। 

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পরবর্তী সূচি ৬ ও ১১ জুন বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই। সেই বাছাইয়ে হামজার খেলার কোনো সম্ভাবনাই নেই। পাসপোর্ট ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা ৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের ফিফা উইন্ডোতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলার বৈধতা অর্জন করতে পারেন।