পরকীয়ার অভিযোগে মারধর, যুবকের আত্মহত্যা

পরকীয়ার অভিযোগে মারধর, যুবকের আত্মহত্যা

ফাইল ছবি

ঝালকাঠির রাজাপুরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন নাইম (২৩) নামের এক যুবক। 

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে তার ব্যবহৃত রোহান মৃধা নামের ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন- “আমি একটা জবানবন্দি দিয়েছিলাম সাংবাদিকদের কাছে। ওইটা যখন দিয়েছিলাম তখন আমি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলাম। ওই ভিডিও রেকর্ড সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি না। আমার মৃত্যুতে যদি কোনো কেস হয় তাহলে আমি চাই কেসটা আমার নামে হোক।” 

এর কিছুক্ষনের মধ্যে তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন- “সম্ভব হইলে সবাই আমাকে মাফ করে দিয়েন। আমিও বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি অনেক ক্লান্ত, আর সম্ভব না বাঁচা!” এমন কথা লিখে বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন নাইম মৃধা। 

রোহান মৃধা নামের ফেসবুক আইডিটি নাইমের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারই চাচাতো ভাই ইসমাইল মৃধা। নাইম উপজেলার বারবাকপুর এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে। তিনি শুক্রবার রাতে বিষপান করলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তার অবস্থা বেগতিক থাকায় রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাইমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মৃত্যু হয় নাইমের।

মৃতের পিতা ছিদ্দিক মৃধা জানায়, গত বুধবার রাতে ফারুক হাওলাদারের মেয়ে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে নাইমকে তার কাছে যেতে বলে। সেখানে গেলে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ফারুক ও তার ছেলে আমার ছেলে নাইমকে রাস্তায় ফেলে বেধরক মারধর করে এবং আমার ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে লোকজন নাইমকে নিয়ে নানা রকম কথা বলে। সেই অপমান সইতে না আমার ছেলে শুক্রবার রাতে বিষ পান করে। বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মারা যায় নাইম। এ ঘটনার আমি বিচার চাই।

এ বিষয়ে ফারুক হাওলাদার জানান, বুধবার রাতে নাইম আমাদের ঘরের জানালার পাশে আসে। টের পেয়ে আমার ছেলে ফয়সাল ঘরের বাইরে এসে নাইমকে এখানে আসার কারন জানতে চেয়ে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তার শরীরে আঘাত করে। আমরা ডাক-চিৎকার শুনতে পেয়ে বাইরে এসে আমার ছেলেকে থামিয়ে দেই এবং নাইমের কাছে আমার মেয়েকে বিরক্ত করার কারন জানতে চাই। পরে নাইমের দুলাভাই ইকবালকে খবর দিলে সে এসেই কোনো কথা না শুনে আমাকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনায় আমি বৃহস্পতিবার রাজাপুর থানায় অভিযোগ দেই।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মু. আতাউর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরের দিন সন্ধ্যায় উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হলে নাইমের বাবা এ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করবে এবং পরবর্তীতে কোনো মামলা বা অভিযোগ দিবে না এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে জানতে পারি নাইম নামের ছেলেটির বিষপানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।