দিল্লি সফরে মমতা

দিল্লি সফরে মমতা

ছবিঃ সংগৃহীত।

বকেয়া প্রাপ্য আদায় ও ভারতের বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠক, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ- এরকম একগুচ্ছ কর্মসূচি ও দাবি-দাওয়া নিয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সঙ্গে রয়েছেন তার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি।

 

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দিল্লিতে দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা ব্যানার্জি। লোকসভা নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। সঙ্গে থাকবেন অভিষেক ব্যানার্জি।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। একশ দিনের কাজের রুপি ছাড়াও গ্ৰামীণ সড়ক যোজনা, আবাস যোজনাসহ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপির দাবি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের।

 

কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিল্লি যাওয়ার আগে মমতা বলেন, সোমবার এমপিদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে যোগ দেবো। পরের দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছি।

‘কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে। কেন্দ্রীয় স্কিমের কাজ হয় ঠিকই, কিন্তু সব টাকা তো আর তাদের নয়। আমাদেরও শেয়ার আছে। আমাদের থেকে ট্যাক্স তুলে নিয়ে যায়। স্বাস্থ্য দপ্তরের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।’

 

কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সেনাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। সেদিন শিলিগুড়ির আগে সুখনার ওখানে দেখলাম, সব বাড়ি গেরুয়া করে দিয়েছে। আমাদেরও বলেছে, সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেরুয়া রঙ করে দিতে হবে। কেন করব? আমাদের রাজ্যের তো একটা ব্র্যান্ড রয়েছে নীল-সাদা। এটাকে কোনো দলের ব্র্যান্ড নয়। আমরাই প্রথম সরকারি ভবনে রঙ দেওয়া শুরু করি।

‘প্রতিটি জায়গায় বিজেপির লোগো লাগাতে হবে? আর বিজেপির রঙ করাতে হবে? মানুষের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকবে না। কে কি খাবে সেটাও ঠিক করে দেবে। কে কি পড়বে সেটাও ঠিক করে দেবে। বইয়ের সিলেবাসে যাচ্ছেতাই পড়াবে। মানুষের মাথা খারাপ করে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা চলছে। এসব নিয়ে আমরা আওয়াজ তুলছি। এসব কথা আমার বক্তব্যে থাকবে।’

 

সম্প্রতি দেশটির সংসদে ‘স্মোক ক্যান’ কাণ্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেন, সংসদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তায় গাফিলতি রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। এটি অত্যন্ত উদ্যোগের বিষয়, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

 

‘ওই ঘটনায় ডেরেক ও’ব্রায়েনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও অনেককে বরখাস্ত করা করেছেন স্পিকার। আমরা চাই তদন্ত যথাযথ হোক। তবে এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের কোনো হাত নেই। পশ্চিমবঙ্গের বিরুদ্ধে অপপ্রচার কার হচ্ছে।’

মমতার বক্তব্য, আমরা কোনো উল্টাপাল্টা মন্তব্য করি না। আমরা যেটা বলবো, দায়িত্ব নিয়ে বলবো। পশ্চিমবঙ্গের বিরুদ্ধে বদনাম করাই, ওদের (কেন্দ্রীয় সরকার) সারাক্ষণের কাজ। পশ্চিমবঙ্গ কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রশ্রয় দেয় না।

এদিকে, মমতা ব্যানার্জির দিল্লি সফর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেছেন, সংসদের অধিবেশন হলেই পিসি (মমতা) ওখানে এপাং-ওপাং-ঝপাং করতে যায়। অশ্বডিম্ব কিছু হবে না। চোর ধরো-জেল ভরো, চলছে চলবে। ফিরে এসে দেখবেন, আবারও তৃণমূলের কোনো না কোনো নেতা বা মন্ত্রী জেলে ঢুকে গেছেন।