আজ ২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস

আজ ২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস

সংগৃহীত

বিজয়ের ৫ দিন পর আজ ২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে ২১ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নাটোরের উত্তরা গণভবনে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয়।

জানা যায়, ২১ ডিসেম্বর তৎকালীন গভর্ণর হাউস তথা বর্তমান উত্তরা গণভবনে ১৪১ জন অফিসার, ১১৮ জন জেসিও, ৫ হাজার ৪৫০ জন সিপাহী এবং প্যারামিলিশিয়া বাহিনীর ১ হাজার ৮৫৬ জন সদস্য নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নওয়াব আহমেদ আশরাফ আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণ দলিলে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন মিত্র বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রঘুবীর সিং পান্নু। পাকিস্তান বাহিনীর নাটোর ব্যারাক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ ভারতীয় বাহিনীর আইসি ৪৫৫১ ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে নাটোর ফুলবাগান এলাকায় অবস্থিত স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও গণকরবে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে এক বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা মহড়া ও উপজেলা পরিষদের হলরুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও পাঁচ দিন পর অর্থ্যাৎ ২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় নাটোর ছিল পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দ্বিতীয় সামরিক হেডকোয়ার্টার। এখান থেকেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যুদ্ধ পরিচালনা করতো পাকবাহিনী। ১৬ ডিসেম্বর দেশের অন্যান্য স্থান মুক্ত হলেও ২১ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত পুরো নাটোর ছিল পাক বাহিনীর দখলে।

নাটোরের উত্তরা গণভবন ছাড়াও আনসার কোয়ার্টার, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, পিটিআই, নাটোর মহারাজা জেএন উচ্চ বিদ্যালয়, ভোকেশনাল স্কুল, দিঘাপতিয়া কালিবাড়ি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ছিল পাক সেনাদের ঘাঁটি। এ সময় পাক হানাদার বাহিনী নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান, ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকলপট্টি, মল্লিকহাটি, বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুর উপজেলার নাড়িবাড়ি, সিংড়া উপজেলার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরসহ ২০টি জায়গায় গণহত্যা চালায়।

১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর বগুড়া, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী, নবাবগঞ্জ থেকে পাক সেনারা নাটোরের পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশন ক্লাব, এন এস সরকারি কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি ও দিঘাপতিয়া উত্তরা গণভবনে (তৎকালীন গভর্নর হাউস) আশ্রয় নেয়। এরপর ২১ ডিসেম্বর উত্তরা গণভবন চত্বরে পাকিস্তান বাহিনীর নাটোর ব্যারাক কমান্ডার পিএ ১৭০২ ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ ভারতীয় বাহিনীর আইসি ৪৫৫১ ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আত্মসমর্পণ করে।