স্বতন্ত্র প্রার্থীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ৫

স্বতন্ত্র প্রার্থীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ৫

ফাইল ছবি

নির্বাচনী প্রচারণার সময় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বসুভান্ডারদহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিনিধি আব্দুল মালেক বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিককে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা শেষে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে গাড়িবহর নিয়ে বসুভাণ্ডারদহ এলাকায় যাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। এ সময় নির্বাচনী অফিসে পৌঁছানোর আগেই তার গাড়িবহর গতিরোধ করা হয়। গাড়ি আটকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও ধর্মীয় উসকানিমূলক কথা বলে নৌকার সমর্থকরা। পরে প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা গাড়ি থেকে নামলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে হামলা চালানো হয় দিলীপ কুমারের কর্মীদের ওপর। পরে তাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মানিক। এ সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফরোজা পারভীন, জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ও নির্বাচনীকর্মী নাজনীন আক্তার, রাকিব, সালমান ও আফিলসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। হামলার সময় নারী সমর্থক ও নারী নেত্রীদের উপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ভান্ডারদহ গ্রামের আবু ছদ্দিন নামে এক সমর্থক বলেন, আমরা ঈগলের অফিসে বসে ছিলাম। আমাদের নেতা দিলীপ কুমার আগারওয়ালা আসবেন, কিন্তু পরিকল্পিতভাবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন আমাদের অফিসের সামনে এসে উল্টা-পাল্টা শ্লোগান দিতে থাকে। পরে আমাদের নেতা আসার সঙ্গে সঙ্গেই তারা হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি রিকশা-ভ্যান ভাঙচুর করে হামলাকারীরা।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সেখানে পৌঁছায় সদর থানার একাধিক টিম। পরে ঘটনাস্থলে যান জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেখান থেকে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিক, ভান্ডারদহ গ্রামের ফারুক হোসেন, সুমন আলী ও শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের যুগিরহুদা গ্রামের হাফিজুর রহমানকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে থানায় নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ওই ঘটনায় রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিনিধি আব্দুল মালেক বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিককে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।