মনিপুরে আবার সহিংসতা, ৫ জেলায় কারফিউ

মনিপুরে আবার সহিংসতা, ৫ জেলায় কারফিউ

সংগৃহীত

নতুন বছরের শুরুতেই হিংসা আর রক্তপাত দেখা দিয়েছে ভারতীয় রাজ্য মনিপুরে। সোমবার বিকেলে উপত্যকার থৌবল জেলায় গোষ্ঠীসংঘর্ষে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে রাজধানী ইম্ফলসহ উপত্যকার পাঁচ জেলায় কারফিউ জারি করেছে মনিপুর সরকার। থৌবল ছাড়াও তালিকায় রয়েছে, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, বিষ্ণুপুর এবং ককচিং।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নিহত তিন ব্যক্তিকে একটি গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লিলং চিংঝাও এলাকায় গাড়ি আটকায় বিপক্ষ শিবিবের দুষ্কৃতিকারীরা। তাদের এবং গাড়ির চালককে গুলি করে খুন করার পাশাপাশি গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর উপত্যকার পাশাপাশি লাগোয়া পাহাড়ি অঞ্চলেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আহত হন আরো কয়েকজন। এই পরিস্থিতিতে মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ যুযুধান দু’পক্ষের কাছে সংযত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

২০২২ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মনিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছিল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মনিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই মনিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জোসহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের বেশির ভাগই খ্রিস্টান) সংঘাতের সূচনা হয়েছিল।

সহিংসতা ঠেকাতে গত ৬ মে মনিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। নামানো হয় সেনাবাহিনী এবং আসাম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেয়া হয় সিআরপিএফের সাবেক প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তার অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহকে সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার-এর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে সহিংসতা থামেনি। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় ২০০। ঘরছাড়া ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা