জাপানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯২

জাপানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯২

সংগৃহীত

নতুন বছরের প্রথম দিনে জাপানে অনুভূত হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে। আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৪২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উদ্ধার অভিযান চালানোর পরে নিখোঁজদের জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার আশা অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, জাপানের মধ্যাঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রভাবে ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী কুকুর। ভূমিকম্পে গর্ত হয়ে ধসে গেছে বিভিন্ন রাস্তা। ইশিকাওয়া অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিধসের কারণে আটকা পড়া সম্প্রদায়ের শত শত মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য লড়াই করছে হাজার হাজার উদ্ধারকারীরা।

এদিকে আমেরিকান গণমাধ্যম ব্যরনস জানিয়েছে, নোটো উপদ্বীপের বন্দর শহর ওয়াজিমা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বাতাসে এখনও কাঁচের একটি তীব্র গন্ধ এবং একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ড থেকে ধোঁয়ার আভা দৃশ্যমান রয়েছে। এই আগুনই প্রথম দিনে শত শত স্থাপনা ধ্বংস করেছে।

পোড়া গাড়ি ও ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের পাশে দাঁড়িয়ে হিরোইউকি হামাতানি নামের ৫৩ বছরের এক বাসিন্দা এএফপিকে জানিয়েছে, ‘আমরা নববর্ষের দিনে আত্মীয়রা সবাই মিলে আনন্দ করছিলাম, সেই মুহূর্তে ভূমিকম্প হয়। এখন বাড়িটি শুধু দাঁড়িয়েই আছে, কিন্তু এটি এখন বসবাসের যোগ্য নয়... ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার মতো জায়গা আমার মনে নেই’।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর ওয়াজিমা। সোমবার চার ফুট উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয় সেখানে। আশপাশের অনেক এলাকাতেও তৈরি হয় ছোট ছোট সুনামি।

ভূমিকম্পের পর দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বৈঠকে বসেন দেশটির প্রদানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। বৈঠকের পর তিনি অসংখ্য হতাহতের ঘটনা, ভবন ধস এবং দাবানলসহ বিরাট ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান ও উদ্ধারের জন্য আমাদের সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়াতে হবে।’ সাংবাদিকদের কিশিদা বলেন, ‘এখন বেশ শীত পড়েছে। এজন্য আমি জরুরি সহায়তা পণ্য হিসেবে পানি, খাবার, কম্বল, গা গরম রাখার তেল, জ্বালানি, পেট্রোল সরবরাহের নির্দেশনা দিয়েছি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ইশিকাওয়ায় বাড়িঘর ও গাড়িগুলো ভীষণভাবে কাঁপছে। দোকানপাট ও ট্রেনে আতঙ্কিত লোকজন ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে আর রাস্তাগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল।

প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপান। পরে সেখানে সুনামি জারি করা হয়।