ঢামেকে একইসাথে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী

ঢামেকে একইসাথে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী

ছবিঃ সংগৃহিত।

বিয়ের আট বছর পর দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে একে একে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী রুমা আক্তার (২৬)। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের গাইনি বিভাগে সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে থেকে বেলা ১১টার মধ্যে নরমাল ডেলিভারিতে জন্ম হয় তাঁর পাঁচ সন্তানের। তত্ত্বাবধানে ছিল ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অভিজ্ঞ বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমা হকের নেতৃত্বে একটি টিম।

চাঁদপুর সদর উপজেলার দাশাদী গ্রামের শহিদ মোল্লার স্ত্রী রুমা। তাঁর বাবার নাম মৃত মফিজ শেখ। 

অধ্যাপক ডা. নাজমা হক বলেন, জন্ম নেওয়া তিন ছেলে, দুই মেয়ে। এই পাঁচ সন্তানের মধ্যে জন্মের সময় একজন কন্যাসন্তানকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি তিন ছেলে, এক মেয়েকে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

শিশুটির মাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। 

তিনি আরো বলেন, রবিবার দিবাগত রাতে প্রসব ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয় রুমা আক্তার। পড়ে সকাল তাঁকে লেবার রুমে নেওয়া হয়।

রাত ৯টা ৪০ মিনিটে প্রথম সন্তান নরমাল ডেলিভারিতে জন্ম নেয়। পড়ে একে একে পাঁচ নবজাতকের জন্ম হয়। দীর্ঘ আট বছর পর এই প্রথম তাঁর সন্তান জন্ম হয়েছে বলেও জানান চিকিৎসক। 

তিনি আরো বলেন, ‘শিশুগুলো অপরিপক্ব অবস্থায় ২৯ সপ্তাহে জন্ম নিয়েছে। তাদের ওজনও কম।

আমরা তাদের নবজাতক বিভাগের এনআইসিইউতে রেখেছি। এখন তাদের দেখভাল করবেন নবজাতক বিভাগের চিকিৎসকগণ।’

এদিকে চার জীবিত সন্তান জন্ম দেওয়া রুমা আক্তারের স্বজনরা খুবই আনন্দিত। তাঁরা রুমার বেডের পাশে রয়েছেন। তার দুই বোন মাকসুদা ও ভগ্নিপতি আলামিন। 

বোন মাকসুদা বলেন, ‘রুমার বিয়ের আট বছর হলেও তার কোনো সন্তান হচ্ছিল না। পরে গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস পর আমরা জানতে পারি। আলট্রাসনোগ্রাম করার পর জানতে পারি তার চার সন্তান। তার প্রবাসী স্বামী শহিদকে জানিয়ে তাকে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আমাদের (বোনের) বাড়িতে নিয়ে আসি। এখানেই ছিল। রবিবার মধ্য রাতে তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। তখন দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারি তার পাঁচ সন্তান। তবে জন্মের সময় এক সন্তান মৃত অবস্থায় জন্ম হয়।’

রুমার স্বজনরা সকলের কাছে দোয়া কামনা করে বলেন, ‘সন্তানগুলোকে যেন সুস্থ অবস্থায় বাসায় নিয়ে যেতে পারি।’

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একজন প্রসূতি নারীর একসাথে পাঁচ সন্তান জন্ম দেওয়া খুবই কষ্টকর। তবে আমদের এখানে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের কারণে তা সম্ভব হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সন্তানগুলো অপরিপক্ব হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাদের জন্য এনআইসিইউ প্রয়োজন হয়। আমরা দ্রুত ওই সন্তানদের জন্য তা ব্যবস্থা করেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাদের জন্য যত ধরনের সহযোগিতা দরকার, তার ব্যবস্থা করা হবে।’