সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণের মৌসুম শুরু কাল

সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণের মৌসুম শুরু কাল

ছবি: সংগৃহীত

শীতের তীব্রতা বেশি থাকলেও সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই রোববার (২৮ জানুয়ারি) গোলপাতা সংগ্রহের জন্য বনে রওনা হবেন মোংলার দক্ষিণ চরের বাসিন্দা বাওয়ালি মোজাম্মেল হাওলাদার। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরেই সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। বনবিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গোলপাতা আহরণে আগামীকালই বনের অভ্যন্তরে যাবেন বাওয়ালিরা। এ মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার থেকে গোলপাতা আহরণকারী বাওয়ালিদের অনুমতিপত্র দেওয়া হবে। এরপর উপকূলের বাওয়ালিরা বনে প্রবেশ করবেন।

মোংলার জয়মনি এলাকার বাওয়ালিরা বলেন, প্রতি বছর গোলপাতা আহরণের আগে নৌকা মেরামত করা লাগে। গোলপাতা আগের মতো এখন আর চলে না। ভালো দামও পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেও কষ্ট হয়। গোলপাতা আহরণের নৌকাগুলো অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না হওয়ার কারণে গোলপাতার মৌসুম শেষ হলে নৌকাগুলো নদীর চরে ফেলে রাখতে হয়।

মোংলার গোলপাতা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, বর্তমানে গোলপাতা মানুষের কাছে আগের মতো চাহিদা না থাকায় বিক্রি কমে গেছে। যার কারণে অনেকের আড়তে গতবারের পুরোনো গোলপাতা এখনো রয়ে গেছে। 

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতার কূপ রয়েছে। একটি হলো শ্যালা গোলপাতা কূপ ও অপরটি চাঁদপাই গোলপাতা কূপ। বাওয়ালিরা সুন্দরবনে যেন নির্বিঘ্নে গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বনবিভাগ থেকে যেমন নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা তেমনি এ গোলপাতা আহরণে রয়েছে শর্তও। গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না। কোনো বাওয়ালি যদি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটেন কিংবা বনের ক্ষতি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেখ মো. আনিসুর রহমান জানান, ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া গোলপাতা আহরণ মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ মৌসুমে শ্যালা ও চাঁদপাই কূপ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এবার মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে ভ্যাট ব্যতীত রাজস্ব নেয়া হচ্ছে ৬০ টাকা। তবে দিনদিন গোলপাতার ব্যবহার কমে আসায় কূপ থেকে গোলপাতা আহরণের পরিমাণ কমে আসছে। আগে যেখানে ১৫০-২০০ নৌকা হতো সে তুলনায় এবার প্রচুর কম নৌকা গোলপাতা আহরণে যাচ্ছে। নৌকার সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাওয়ালির সংখ্যাও কমে গেছে। এবারো লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম গোলপাতা আহরণ হবে।