নতুন প্রধান নির্বাচক কে এই গাজী আশরাফ

নতুন প্রধান নির্বাচক কে এই গাজী আশরাফ

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু

নানান সমালোচনা আর বিতর্কের পর নির্বাচক প্যানেল থেকে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়েছেন হাবিবুল বাশার সুমনও। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর নতুন প্রধান নির্বাচক পেলো দেশের ক্রিকেট। নান্নুর স্থলাভিষিক্ত হলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বোর্ড সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। তার ভাষ্য, যে কয়টা নাম এসেছিল, আমাদের কাছে; তাদের মধ্যে তাকে (লিপু) সেরা মনে হয়েছে। কাজেই সেটা নিয়ে খুব একটা তর্ক হয়নি। তিনি রাজি আছেন; জানার পর আমরা একবাক্যে স্বীকার করে নিলাম তাকে (উনাকে) প্রধান নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ দেব।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক রাজধানী ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে জন্ম নেওয়া আশরাফের বয়স এখন ৬৪ বছর। ক্রিকেট জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর ‘লিপু’ ডাকনামে পরিচিত গাজী আশরাফ বাংলাদেশের ক্রিকেটের মানোন্নয়নে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করেছেন।

লিপুর খেলোয়াড়ি জীবন :

১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বপ্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে তার অভিষেক হয়। ওই দলের নেতৃত্বও দেন তিনি। অর্থাৎ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক ছিলেন লিপু। দেশের ক্রিকেটের ঊষালগ্নে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে আইসিসি ট্রফি পর্যন্ত বাংলাদেশের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার মুরাতুয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দিনটি সুখকর ছিল না বাংলাদেশ ও লিপুর। ৩ বল মোকাবিলায় রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। সেদিন ইমরান খানের শক্তিশালী পাকিস্তানের সামনে মাত্র ৯৪ রানে অল-আউট হয়েছিল লাল-সবুজেরা। জবাবে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছিল দ্য গ্রিন ম্যানরা। তবে অর্জনের খাতায় পাকিস্তানি লিজেন্ড জাভেদ মিয়াদের উইকেটটি পুরে ছিলেন লিপু।

এরপর আরও ৬ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১৯৮৬ সালের জন প্লেয়ার গোল্ড লিফ ট্রফিতে দুটি ও ১৯৮৮ সালের এশিয়া কাপে তিনটি এবং ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়া-এশিয়া কাপে দুটি। সবগুলোতেই অধিনায়কত্ব করেন তিনি। কিন্তু ব্যাটিং কিংবা বোলিং- কোনোটিতেই স্মরণীয় কিছু করতে পারেননি। এসব ম্যাচে ব্যাট হাতে তার স্কোর যথাক্রমে ১০ (২৪), ২ (৭), ১০ (২৯), ৮ (৩১), ১১ (৭০) ও ১৮ (৭৫)।

জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সফল ছিলেন তিনি। আবাহনী ক্রীড়া চক্রের দায়িত্ব পালনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলেরও নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৫ জাতীয় ক্রিকেট দলকে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষেও খেলেন তিনি।

জানা গেছে, লিপুর অধিনায়কত্বকালে বাংলাদেশের ক্রিকেট বেশ অগ্রসর হয়। জাতীয় দলকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য না এলে দিলেও ৯০-এর দশকে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, আতহার আলী খান, আকরাম খান, গোলাম নওশের প্রিন্স, আমিনুল ইসলাম বুলবুলসহ বেশ কয়েকজন উদীয়মান খেলোয়াড়ের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব : অবসর নেওয়ার পর দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে কাজ করেন লিপু। বিভিন্ন সময়ে বিসিবির পরিচালক, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিপিএল গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আইসিসি ট্রফি জয়ী দলের ম্যানেজার ছিলেন লিপু।