কমিটিতে পদ পেতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিলেন ১৪০০ জন

কমিটিতে পদ পেতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিলেন ১৪০০ জন

ফাইল ছবি

দীর্ঘ ১০ বছর পর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন হচ্ছে। আগের দুইবারের মতো এবারও সম্মেলন ছাড়াই, জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নতুন কমিটিতে পদ পেতে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন এক হাজার ৪০০ জনের বেশি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক (চট্টগ্রাম নগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) রাকিব সিরাজী।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা নেওয়া শেষ হয়েছে। এতে পদপ্রত্যাশী এক হাজার ৪০০ জনের বেশি।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করা শুরু করে তারা। ১৬ ফেব্রুয়ারি জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও পরে সময় বাড়িয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়।

জানা গেছে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রাথমিকভাবে নতুন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের বাছাই করবে, যাদের পরে বাকি কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে বেশিরভাগ নেতারাই জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য। গত চার দশক ধরে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ এমইএস কলেজ ও সিটি কলেজ বলয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নানান সমীকরণে এইবারের আলোচনায় রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ।

২১ বছরে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের দুটি কমিটি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৩ সালে এমআর আজিমকে সভাপতি ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি হয়। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ইমরান আহমেদ ইমুকে সভাপতি ও নুরুল আজিম রনিকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন নুরুল আজিম রনি। সেসময় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরকে।

সম্মেলন ছাড়া কমিটি গঠন প্রসঙ্গে নুরুল আজিম বলেন, ‘সম্মেলন ছাড়া কমিটি গঠন হওয়া উচিত নয়।’

নগর ছাত্রলীগের কমিটির জন্য পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা মূলত দুটি বলয়ে বিভক্ত। তাদের একটি পক্ষ হচ্ছে প্রয়াত সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। এই পক্ষ বর্তমানে মহিউদ্দিনপুত্র শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী বলে নিজেদের পরিচয় দেয়। অপর পক্ষ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলয়ের।

ছাত্রলীগের নতুন কমিটির পদ বাগিয়ে নিতে নওফেল ও নাছির অনুসারীদের মধ্যে স্নায়ু লড়াই চলছে। এরই মধ্যে নগর যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির শীর্ষ পদ পেয়েছেন নওফেল অনুসারীরা। ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদেও কি নওফেল অনুসারীরা প্রাধান্য পাবে- তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।

নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা কাজ করছেন। সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই দ্রুত কমিটি ঘোষণা করবেন বলে আশা করছি।’

নগর ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নূরুন নবী সাহেদ, ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার, কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিন্দ্য দেব, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পলাশ, মহসিন কলেজের মায়মুন উদ্দীন।

এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন- ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের জাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ, সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের আশীষ সরকার, মুহাম্মদ তাসিন, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের মীর মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, শাহাদাত হোসেন হীরা, ইমন হোসেন, আজিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, নগর ছাত্রলীগের উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রাশেদ চৌধুরী, উপ-ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক এস এম হুমায়ন কবির আজাদ, নগর ছাত্রলীগ নেতা ফাহাদ আনিস ও খালেকুজ্জামান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।