নরসিংদীর শিবপুরে নকল বিড়ির অগনিত কারখানা: নেপথ্যে নেপাল বাবু ও আসাদ গং

নরসিংদীর শিবপুরে নকল বিড়ির অগনিত কারখানা: নেপথ্যে নেপাল বাবু ও আসাদ গং

ফাইল ছবি

নকল, জাল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিভিন্ন নামে বিড়ি তৈরি করে নরসিংদীর হাট-বাজারগুলোতে বাজারজাত করে আসছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বিড়ি তৈরি বা বাজারজাতের আইন ও কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না তারা।

তথ্য মতে জানা যায় – নকল আসলের বাজারে বোঝা মুশকিল কোনটা নকল আর কোনটি আসল । এই নকলের বেড়াঝাল থেকে রেহাই পায়নি বিড়িও অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নরসিংদী শিবপুরের “কামরাব” এলাকায় গড়ে উঠেছে নকল বিড়ির অগনিত কারখানা । নেই কোনো বৈধ সাইনবোর্ডে, উক্ত সব নকল বিড়ি তৈরীর কারখানা গুলোতে,নেই অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদিত ছাড়পত্র, নেই কোন পন্যের মান নিয়ন্ত্রণের বালাই, শুধুমাত্র একটি ট্রেড লাইসেন্স করেই আবাসিক এলাকায় অবাধে গড়ে উঠেছে অগনিত নকল বিড়ির কারখানা।

নরসিংদীর শুধু শিবপুর এলাকাতেই এই জাতীয় অবৈধ নকল বিড়ি তৈরিতে ৫০ টির অধিক কারখানা সক্রিয় রয়েছে, উক্ত কারখানায় বাজারের নিম্মমানের বজ্জা তামাক থেকেই তৈরি হচ্ছে নামে বেনামে অসংখ্য ব্রান্ডের নকল বিড়ি প্রস্তত  দিন রাত ২৪ ঘন্টা, নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে প্রতিটা পেকেটের গায়ে। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে। বিশেষ সূত্রে তথ্য মিলেছে অবৈধ ব্যান্ডরোল ও বিড়ি তৈরির কাঁচামাল এঁর যোগান দেয় নেপাল বাবু নামে এক দাদা। প্রতিষ্ঠানের কোনো বৈধ অনুমোদন পত্রের কোথাও কোনো অস্তিত্ব মিলে নাই, রীতিমতো স্থানীয় থানা পুলিশ ম্যানেজ করে অবৈধ নকল বিড়ি অবাধে উক্ত জেলা থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন কাছে ডিলার নিয়োগ করে বিক্রি হচ্ছে নকল বিড়ি। আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় নিম্ম আয়ের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেই টার্গেট করে পাইকারী ডিলার নিয়োগ করে নির্দ্বিধায় চলছে এসব ভূয়া নামে বেনামে নকল বিড়ির ব্যবসা।

অন্যদিকে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করছে কোটি কোটি টাকা। সরকার প্রতিটি ব্যান্ডরোলের ট্যাক্স নয় টাকা ০৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে, আর প্রতিটি প্যাকেট বিড়ি ন্যূনতম ১৮ টাকার উপরে বিক্রি জন্য বলা হলেও নামে বেনামের উক্ত সব ভুয়া কোম্পানিগুলো নকল ব্যান্ডরোলের বিড়ি প্যাকেট বিক্রি করছে মাত্র সাত থেকে আট টাকা করে। এসব শোনার কোন টাইম নেই , হেইলারে টেহা দেই প্রতি মাসে , স্থানীয় বেশ কিছু রাজনৈতিক লোকজন শেল্টার দিয়ে অবৈধ এসব কারখানা সচল রাখতে সহায়তা করে মাসিক মোটা অংকের চাঁদায় বিনিময়ে। সরেজমিনে বেশ কিছু কারখানায় ঘুরে জানা গেছে এসব তথ্য অমুক ভাই, তুমুক ভাই এঁর কারখানা চলে ভাইয়ের নামের উপর। কখনো কখনো জেলা পর্যায়ে সংবাদকর্মীরাও নাকি আসে কিছু ধরিয়ে দিলেই নাকি চলে যায় নাম প্রকাশ এ অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

নরসিংদী জেলার আশেপাশের এলাকা –  মনোহরদী, শিবপুর, বেলাবো, ভৈরব সহ ব্রাক্ষনবাড়িয়ার – সরাইল, নাসিরনগর, বিজয়নগর, আশুগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মাধবপুর সহ অন্যান্য এলাকায় বেশ কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল ব্রান্ডের ভূয়া ও বজ্জা রাবিশ তামাক থেকে প্রস্ততকৃত এই জাতীয় নামে বেনামে ভেজাল বিড়ি। আবাদ বিড়ি, বাদশা-২ বিড়ি, আজিম বিড়ি, জামাল বিড়ি, যমুনা বিড়ি, নবাব বিড়ি, পাখি বিড়ি, আফিজ বিড়ি, মিজান বিড়ি, সাথী বিড়ি, রাঙ্গা বিড়ি, আলম বিড়ি, স্বাধীন বিড়ি, সাইফ বিড়ি, কমল বিড়ি, রবি বিড়ি, স্টার বিড়ি, গোলাপ বিড়ি, অমিত বিড়ি, আমিন বিড়ি, ঝর্ণা বিড়ি, আনার বিড়ি, বাদশা বিড়ি-১, ফ্রেস বিড়ি, রেড়িও বিড়ি, তার বিড়ি, রতনা বিড়ি, ময়না বিড়ি নামে প্রতিটি হাট – বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোল বিহীন বিড়ি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। নরসিংদীতে শিবপুর থানা এলাকার সবচাইতে পুরোনো ব্যবসায়ী আসাদ বিড়ির মালিক আসাদ মিয়ার কারখানাতেই অধিকাংশ নকল বিড়ির কারখানা বিদ্যমান, সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা যায় – আসাদ মিয়া তাঁর এই নকল বিড়ির অবৈধ ব্যবসা কোম্পানির আড়ালে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা । সাইনবোর্ড বিহীন এসব অবৈধ নকল বিড়ির কারখানাগুলো গড়ে তুলেছে খোদ জনসাধারণের বসবাসের পাড়া মহল্লাতেই,

বিড়ির প্যাকেটে ব্যবহার করা সরকারী রাজস্ব ব্যান্ডরোল লেভেলটি পর্যন্ত নকল, অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে প্রতিটি বিড়ির প্যাকেটে ব্যবহার করা উক্তসব অবৈধ নকল ব্যান্ডরোল ও‌ নিম্নমানের তামাক সাপ্লাই দিয়ে থাকে “নেপাল বাবু” নামের একজন বিড়ির ডনের কথোপকথন, উক্ত অবৈধ বিড়ির সিন্ডিকেটদের আইনের আওতায় এনে নরসিংদী জেলা পুলিশের প্রতি সাজা দেয়ার অনুরোধ জানাননরসিংদীর সুশীল সমাজ।