ইবির হলে মধ্যরাতে মারামারি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ইবির হলে মধ্যরাতে মারামারি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ছবি- নিউজজোন বিডি

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে মধ্যরাতে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রুমমেটদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এতে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জোবায়ের রহমান জ্যোতি তার রুমমেট অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাকিল খান শোভনসহ অন্য হল থেকে আসা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন। অন্যদিকে শোভন জ্যোতির বিরুদ্ধে তাকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমনের চেষ্টা ও উদ্ধার করতে আসা বন্ধুদের উপর আক্রমনের অভিযোগ করে।

এ নিয়ে বুধবার প্রভোস্ট ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দুই পক্ষ। এতে দুই পক্ষই নিজেদেরকে মারধরের শিকার বলে দাবি করে। এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জ্যোতির বিরুদ্ধে হলের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করে আরেকটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরে প্রভোস্ট কক্ষটিতে তল্লাশী করে ও জ্যোতিকে তার পরিবারের হাতে সোপর্দ করে।

লিখিত অভিযোগে জোবায়দুর রহমান জ্যোতি বলেন, রাত ২টা ৪৫ মিনিট নাগাদ অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাকিল খান শোভন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাসান শাহরিয়ার, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী ও তাদের বন্ধুবান্ধব ২০-২৫ জন মিলে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় এসে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে প্রচুর মারধর করে ও ছুরিকাঘাত করে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে বের হলে প্রান নাশের হুমকি দিতে থাকে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

অপরদিকে সাকিল খান শোভন পৃথক লিখিত অভিযোগে বলেন, রাতে রুমে শুয়ে থাকাকালীন অবস্থায় জোবায়দুর রহমান জ্যোতি আমার উপরে ধারালো অস্ত্র আক্রমণ করার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় আমার বন্ধুদের জানালে তারা আমাকে উদ্ধার করতে আসে এবং তারাও আক্রমণের শিকার হয় এবং আহত হয়। পরে সে আমার ব্যবহার্য জিনিসপত্র এবং একাডেমীক সার্টিফিকেট বাহিরে ফেলে দেয়। জ্যোতি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ। পূর্বে সে আমার অন্য বন্ধু এবং তার প্রাক্তন রুমমেটকে আক্রমণ করে গলায় কামড় দিয়ে মাংস তুলে নিয়ে আহত করে। এমতবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে এই ঘটনায় হলটির প্রভোস্ট বরাবর সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আরও একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, জোবায়দুর রহমান জ্যোতি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে বিভিন্ন সময়ে দেশীয় অস্ত্র হাতে হলে দেখা যায়। সে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেছে। এমতবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার আবেদন জানান।

পরে হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, রাত ৩টার দিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি। পরে সকালে এসে উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়াও হলটির আবাসিক সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে একজনকে তাঁর অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পরে সবগুলো অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।