১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত

১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত

ছবিঃ সংগৃহীত।

বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য দেশের কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনছে ভারত সরকারের রপ্তানি সংস্থা ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেড (এনসিইএল)। প্রতি কেজি ২৯ রুপি (৩৯ টাকা) দরে এই পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে এরই মধ্যে পেঁয়াজ কেনা শুরুও করেছে সরকার। শিগগির বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে এই পেঁয়াজ পাঠানো হবে।

এদিকে, ভারতের বেসরকারি পেঁয়াজ রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও রমজানে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের পুরোনো ক্রেতা বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে মসলাজাতীয় ফসলের দাম ক্রমেই বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে প্রতিদিনই পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। সেখানে তারা উল্লেখ করেন, গত ৮ ডিসেম্বরের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে যত পেঁয়াজ ছিল, তার প্রায় ৫০ শতাংশই চোরাই পথে দেশের বাইরে চলে গেছে।

এনসিইএলের অধীনস্ত সংস্থা হর্টিকালচার এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (হেপা) প্রেসিডেন্ট অজিত শাহ ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। প্রতি বছরই মার্চ-এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়।‘এতদিন ভারতীয় পেঁয়াজ ওই ঘাটতি সামাল দিলেও দেশটির সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ঘাটতি বেড়েছে। তবে মে মাসে মিশর-তুরস্ক থেকে পেঁয়াজের চালান আসা শুরু হবে। সেসময় দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।

’বিশ্ব বাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক ভারত। গত বছরের ডিসেম্বরে স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায় দেশটি।

তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি বন্ধুপ্রতীম দেশের সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার পেঁয়াজ পাঠানোর অনুরোধের পর দেশগুলোতে মোট ৬৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এই ৬৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজের মধ্যে বাংলাদেশের ভাগে পড়েছে ১ হাজার ৬৫০ টন।

এর আগে, পবিত্র রমজান মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে চিনি ও পেঁয়াজের অনুমতি দিতে ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের জানান, রোজার আগেই ভারত থেকে দেড় লাখ টন চিনি ও পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ মেট্রিক টন চিনি।