ই-ফার্মেসিতে মুকেশ অম্বানী

ই-ফার্মেসিতে মুকেশ অম্বানী

নেটমেডস কিনে নিল রিলায়্যান্স।

ই-ফার্মেসির পৃথীবিতি পা রাখল মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স। ৬২০ কোটি টাকার বিনিময়ে ভাইটালিক হেলথকেয়ার সংস্থার ৬০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে তারা। এর ফলে ভাইটালিকের ভর্তুকি প্রাপ্ত তিন সংস্থা ট্রেসারা হেলথ প্রাইভেট লিমিটেড, নেটমেডস মার্কেট প্লেস লিমিটেড এবং ডাঢা ফার্মা ডিসট্রিবিউশন প্রাইভেট লিমিটেডের ১০০ শতাংশ মালিকানা রিলায়্যান্সের হাতে উঠল। খবর আনন্দবাজার।

মঙ্গলবার রাতে নেটমেডসে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করে রিলায়্যান্স রিটেল ভেঞ্চার্স লিমিটেড (আরআরভিএল)। সংস্থার ডিরেক্টর ইশা অম্বানী বলেন, ‘‘প্রত্যেক দেশবাসীকে ডিজিটাল পরিষেবা পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা। তারই ফলস্বরূপ এই বিনিয়োগ। নেডমেডসের অন্তর্ভুক্তিতে রিলায়্যান্সের হাত আরও মজবুত হল। এর ফলে দেশবাসীকে সাধ্যের মধ্যে অথচ উন্নত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারব আমরা। ডিজিটাল পরিষেবার মাধ্যমে গ্রাহকের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হবে।’’

ভাইটালিক এবং তার ভর্তুকিপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি নেটমেডস নামেই পরিচিত। ২০১৫ সালে নেটমেডসের যাত্রা শুরু হয়। লাইসেন্স প্রাপ্ত অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ওষুধ ও হেলথকেয়ার সামগ্রী পৌঁছে দেয় তারা। নেটমেডসের ওয়েব পোর্টাল এবং অ্যাপের মাধ্যমে ডাক্তার এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও  অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা যায়। কিন্তু অনলাইন ওষুধ সরবরাহে লাভের অংশ তুলনামূলক কম। তার জেরে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল সংস্থাটি। খোঁজ চলছিল বিনিয়োগকারীর। সেই অবস্থাতেই তাদের হাত ধরল রিলায়্যান্স।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারা ভারতে মহামরি দেখা দেওয়ায় অনলাইন কেনাকাটার দিকেই ঝুঁকেছেন সাধারণ মানুষ। তাতে গত কয়েক মাসে ই-কমার্স সংস্থাগুলি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট অধীনস্থ ফ্লিপকার্ট, রিল্যান্সের জিয়োমার্ট এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতাও বেড়েছে।    

তবে শুধুমাত্র নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রই নয়, ওষুধপত্রও এখন অনলাইনই কিনছেন সাধারণ মানুষ। সুযোগ বুঝে গত সপ্তাহেই ই-ফার্মেসির দুনিয়ায় প্রবেশ করেছে অ্যামাজন। অ্যামাজন ফার্মেসির মাধ্যমে আপাতত বেঙ্গালুরুতেই পরিষেবা দিচ্ছে তারা। খুব শীঘ্র গোটা দেশে এই পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে নেটমেডসে বিনিয়োগ করে ছক্কা হাঁকিয়েছে রিলায়্যান্স। কারণ এই মুহূর্তে দেশের প্রায় ২০ হাজার পিন কোড এলাকায় ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করে নেটমেডস।

ভারতে যদিও ওষুধ বিক্রি বা ই-ফার্মেসি নিয়ন্ত্রণে এখনও পর্যন্ত কোনও আইন চূড়ান্ত হয়নি। তবে তার মধ্যেই ই-ফার্মেসির বাজারে মেডলাইফ, নেটমেডস, ফার্মইজি-র টেমাসেক, সেকোয়া ক্যাপিটালের ওয়ানএমজি-র মতো সংস্থার বাড়বাড়ন্তে ওষুধের দোকানগুলি সঙ্কটে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

ই-ফার্মেসিগুলির এই বাড়বাড়ন্তে আপত্তি তুলেছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনও। তাঁদের মতে, ওষুধের দোকানে তবু প্রেসক্রিপশন দেখিয়েই ওষুধ কিনতে হয়। ই-ফার্মেসিগুলিতে সে সবের বালাই না থাকলে, যে কেউ যে কোনও ধরনের ওষুধ কিনতে পারেন।