জাবিতে বেড়াতে যাওয়া চার কিশোরকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

জাবিতে বেড়াতে যাওয়া চার কিশোরকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বেড়াতে যাওয়া চার কিশোরকে আটকে টাকা আদায় ও ক্যামেরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

বুধবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তাদের নাম উৎপল সরকার, সোহাগ বিশ্বাস, দুর্জয় সরকার ও কৃষ্ণ বলে জানা গেছে। তারা সাভারের ফোটনগর এলাকার বাসিন্দা এবং এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের (দ্বিতীয় বর্ষ) শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান নাজিজ এবং একই বিভাগের এহসানুর রহমান ওরফে রাফি।

লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে ওই চার কিশোর দুটি মোটরসাইকেলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়াতে আসে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী গিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চান। বহিরাগত জানতে পেরে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে আরও দুই শিক্ষার্থী এসে ওই চার কিশোরকে ক্যাম্পাসের একটি মাঠে ডেকে নিয়ে যান এবং মারধর করেন। সেখানে তাদের আটকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তিন শিক্ষার্থী। এ সময় টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় তাদেরকে। কিন্তু ওই পরিমাণ টাকা না থাকায় বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে ভুক্তভোগীরা। পরে তাদের কাছে থেকে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গেরুয়া এলাকার একটি দোকান থেকে বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো টাকা উঠিয়ে নেন।

 

এদিকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। তিনি বলেছেন, বহিরাগত কয়েকটি ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বাজেভাবে বাইক চালাচ্ছিল। তারা অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে ভিডিও করছিল। এ সময় তাদের ডেকে কথা বললে তারা তাদের পরিবারকে না জানানোর অনুরোধ করে এবং টাকা দিতে চায়। পরে একপ্রকার জোর করে টাকা ও ক্যামেরা দিয়ে চলে যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, আমরা ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগীদের বাইকে থাকা জিপিএস ট্র্যাক করি এবং বিকাশের দোকান খুঁজে বের করি। এরপর দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করি। লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে ভুক্তভোগীদের হারানো জিনিসপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ স্বীকার করেননি। তবে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। না হলে তারা টাকা ফেরত দিতেন না।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা টাকা ও ক্যামেরা ফেরত দিয়েছে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।