মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র: নদীর নাম মধুমতী (১৯৯৫)

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র: নদীর নাম মধুমতী (১৯৯৫)

ছবি: সংগৃহীত

নদীর নাম মধুমতী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। নূর আলী নিবেদিত চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে কিনো-আই ফিল্মস। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, আলী যাকের, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা জাকের, আফসানা মিমি প্রমুখ।

মধুমতী নদীর পাড়ের এক গ্রামে মোতালেব মোল্লা নামের এক জমিদার ও স্থানীয় মুসলিম নেতা। মোতালেব তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করে। সেই স্ত্রীর এক সন্তান ছিল, নাম বাচ্চু। গ্রামের শিক্ষক অমূল্য চক্রবর্তীর প্রভাব তার মধ্যে ছিল। সে গ্রামে স্কুল স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে। তার কাজে সহয়তা করত তার থেকে বয়সে বড় কিন্তু বন্ধুভাবাপন্ন আখতার। তারা দুজন মিলে অমূল্যের বাড়িতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো। অমূল্য চক্রবর্তীর মেয়ে শান্তি বিধবা হওয়ার পর বাবার বাড়িতেই থাকে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন মোতালেব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়। অন্যদিকে বাচ্চু বেতারে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনে গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেয়। বাচ্চু সেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারের ভয়াবহতা দেখে কুণ্ঠিত হয়। পাশাপাশি তার বাবা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান বলে তাকে কোনো গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয় না। এরই মধ্যে মোতালেব মোল্লার সাগরেদরা মিলে অমূল্য চক্রবর্তীকে হত্যা করে এবং তার মেয়ে শান্তিকে মোতালেবকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।

গেরিলাদের রায়ে রাজাকারদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বিধান করা হয়। কিন্তু মোতালেব বাচ্চুর বাবা হওয়ায় কমান্ডার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। একদিন বাচ্চু নিজে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার মিশন সম্পন্ন করার জন্য ডিঙ্গি ও রাইফেল নিয়ে মধুমতী নদী পাড় হয়ে আসে।

চলচ্চিত্রটি কাহিনি ও সংলাপ রচনার জন্য তানভীর মোকাম্মেল শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে এবং সাইদুর রহমান বয়াতি শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।